আমার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান [ My Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman ] – এর সাথে জানাশোনা আর দশটা আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত মধ্যবিত্ত পরিবারের মতো করেই। বাড়িতে মুরুব্বীদের ছবির সাথে ছবি ছিল। জানতাম তিনি আব্বাদের নেতা, অনেক বড় নেতা। তাকে তার পরিবার সহ দেশের শত্রুরা মেরে ফেলেছে। ১৫ আগস্ট একটু গম্ভীর পরিবেশে একটা দিন উদযাপিত হতো জানতাম। একটা বয়স পর্যন্ত এটুকুই।
আস্তে আস্তে বড় হবার সময় ক্রমশ তাকে চিনতে জানতে শিখেছি। রাজনৈতিক বোধ বুদ্ধি শুরু হবার পর থেকে ক্রমশ তাকে জানার আগ্রহ বাড়তে থেকেছে। যে কটি ঘটনা আমার জীবনে বঙ্গবন্ধুকে জানার আগ্রহ বাড়িয়েছে, একটু নাড়া দিয়ে গেছে, তার মধ্যে শ্রী অধীর স্যারের সাথের একটি ঘটনা বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। কুষ্টিয়া জেলা স্কুলে আসার আগে, আমি বাঁশগ্রাম উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যখন পড়ি, তখন স্যারকে পেয়েছিলাম শিক্ষক হিসেবে। অত্যন্ত সচ্ছল বাড়ির সন্তান। শখের বশেই শিক্ষকতা পরতেন। খুব সুন্দর করে কাপড় পরতেন। চুল রাখতেন ব্যাকব্রাশ করে। খুব সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলতেন বলে দারুণ লাগতো তার ক্লাস। স্যার শুধু পড়াতেনই না, বিভিন্ন রকম প্রসঙ্গে গিয়ে গল্প বলতেন।
একদিন অধির স্যার কি যেন একটা প্রসঙ্গ থেকে এসে আমাদেরকে “পুরুষোত্তম” শব্দটির অর্থ শেখালেন। বুঝয়ে বললেন পুরুষোত্তম মানে কি। উদাহরণ দিতে গিয়ে বললেন “এই ধরো বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান – যাকে পুরুষোত্তম বলা যায়। সেই বয়সে খুব একটা বুঝলাম না, বোঝার কথাও না। যতটুকু মনে আছে তাতে মনে হলো – আকারে, শক্তিতে, বুদ্ধিতে খুব বড় একজন মানুষ। ওরকম মানুষ আমরা দেখিনি। পৃথিবীতে ওরকম মানুষ খুব কম আসে। ওরকম মানুষ হতে পারলে জীবন ধন্য। সবাই মনে রাখবে, ভালো বাসবে। কিন্তু মোদ্দা-কথা ওরকম মানুষ হওয়া প্রায় অসম্ভব। একরম স্বপ্ন আর চিন্তা নিয়া দিনটা কেটে গেল। সেই পুরুষোত্তম নিয়ে আমি পরে কাজ করেছি, সেই প্রসঙ্গে পরে আসবো।
এরপর চলে এলাম কুষ্টিয়া জেলা স্কুলে। কুষ্টিয়াতে আমার দুলাভাই আলাউদ্দিন আহমেদ এর বইয়ের একটা ভালো সংগ্রহশালা ছিল। পাড়ার অভ্যাসের কারণে সেটার পূর্ণ ব্যবহার শুরু করলাম। সেই বয়সে আকর্ষণ করে এরকম বইগুলো শেষ হবার পরে একটু খোঁজাখুঁজি শুরু করলাম। সেখানে পেলাম বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বেশ কিছু বই, ক্যাটালগ। খুব আগ্রহের কিছু আর কিছু বাকি না থাকায় অগত্যা সেগুলোই পড়া শুরু করলাম। সেখান থেকে অনেক কিছু জানলাম নতুন করে। জেলা স্কুলে পরিচয় হলো শওকত স্যারের সাথে। দারুণ বঙ্গবন্ধু ভক্ত। তিনি আমাদের ক্লাস নিতেন না। কিন্তু আমার মামা আব্দুল বারী আমাকে দিয়ে তার কাছে একটি পোস্টার পাঠিয়েছিলেন। সেই পোস্টার দিতে গিয়ে স্যারের সাথে পরিচয় হলো।
পোস্টার হাতে দেবার পরে তিনি চট করে পোস্টারটি নিয়ে লুকিয়ে ফেললেন। একটু এদিক ওদিক দেখলেন। যেন নিষিদ্ধ কিছু একটা। আমি একটা ধাক্কা খেলাম। তখন স্যারকে জিজ্ঞেস না করলেও পরে জানলাম – যেহেতু বিএনপির আমল চলছে, তাই বঙ্গবন্ধুর পোস্টার দেখলে উৎপাত হতে পারে। এই ঘটনাটি আমার মনে রেখাপাত করেছিলো। বিষয়টি আরও বোঝার আগ্রহ তৈরি করেছিলো। তরুণ বয়সে এক ধরণের “নিষিদ্ধ ইশতোরের” রোমাঞ্চও তৈরি হল।
[ আমার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান [ My Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman ] ]
বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, প্রেস ব্রিফিং, প্রেস নোট, ইত্যাদি
আমি একসময় বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতাগুলোর একটা সংগ্রহশালা তৈরির চেষ্টায় “পোয়েট অব পলিটিক্স” নামে একটা ওয়েবসাইট করার কাজ শুরু করেছিলাম।
সাইটির কাজটির দেখভালের মূল দায়িত্ব নিয়েছিলো – নাহিদুল ইসলাম রুমেল। নিয়ামুল হাসানের নেতৃত্বে সাইটটিকে ডিজিটাইজ করেছে – আইয়ুব আনসারি, রাকিবুজ্জামান ও তাদের দল। কিন্তু পরবর্তীতে ডোমেইন সংক্রান্ত জটিলতার কারণে সেটার কাজ আগায় নি। তবে যা ডিজিটাইজ করা হয়েছিলো তার থেকে কিছু ভাষণ এখানে তুলে দেয়া হলো।
জনসভা, সংসদীয় বক্তৃতার পাশাপাশি -প্রেস ব্রিফিং, প্রেস নোট, ইত্যাদি – যুক্ত করা হলো। প্রতিটি বক্তৃতার পরিস্থিতি ভালভাবে বোঝার জন্য – সেই সময়কার ছবি, ভিডিও, প্রেস নোট, ছবি, সম্পর্কিত লেখা, সম্পর্কিত অন্যদের বক্তৃতা, লিফলেট টেক্সট ও বিশ্লেষণগুলো – ক্রমশ যুক্ত করা হবে।
ইতিহাসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গাগুলো হলো – বদলে যাবার সময়। একটি জনগোষ্ঠীর, জাতির বা মানচিত্রের । সে বদল কখনও করেছে প্রকৃতি। কখনো মানুষ নিজে হাতে। মানুষের বদলানোর মুল কারণ ছিল রাজনৈতিক। সেসব – কারণ, প্রস্তুতি, সময়, ফলাফল – জানা/বোঝার জন্যই – আমরা ইতিহাসের পাতা হাতড়ে ফিরি।
সেসব ঝড়ো সময়ের – পরিস্থিতি, দর্শন, নীতি, আদর্শ, ঘটনা, পতি-ক্রিয়া জানার অনেক মাধ্যম আছে। আছে – গান-কবিতা, সংবাদ পত্র, সরকারি নথি, প্রকাশিত বই, ইত্যাদি। আর আছে বক্তৃতা। আমাদের মনে হয় সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
পৃথিবী বদলে দেয়া সিদ্ধান্তগুলোর ঘোষণা হয়েছে কোন একটি বক্তৃতায়। মাত্র কয়েক মিনিটের বক্তৃতা, বদলে দিয়েছে কোন দেশের মানচিত্র; কোন জাতির ভাগ্য। সেসব বক্তৃতাতে এক ধরনের জাদুশক্তি ছিল। কয়েক মিনিটে আবৃত্তি করা সেসব পঙক্তিমালার শক্তি – লক্ষ, বুলেট বোমাকে হার মানিয়েছে। অসাধারণ সেসব বক্তৃতার স্বপ্নে জড়ো হয়েছে পৃথিবীর স্বপ্ন তরুণরা। পরিবর্তনের স্বপ্নে, স্বাধীনতার স্বপ্নে, দিন বদলের স্বপ্নে। তারপর সেই তারুণ্য পাল্টে দিয়েছে – দেশ, মানচিত্র, মাতৃভূমি।
সরাসরি যোগাযোগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম বক্তৃতা। আদর্শ প্রচারের সবচেয়ে বলিষ্ঠ মাধ্যম বক্তৃতা। জনমত তৈরি মুল হাতিয়ার বক্তৃতা। এসব কারণেই কারণেই যুগযুগে বক্তৃতা গুলো ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল হয়েছে।
১ম থেকে ২৫ মার্চ – ১৯৭১ এর ঘটনাপ্রবাহ
বঙ্গবন্ধুর তৈরি আওয়ামী লীগের ঘোষণাপত্র
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ
- বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ১৯৫৫ সাল
- বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ১৯৫৬ সাল
- বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ১৯৬৮ সাল
- বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ১৯৬৯ সাল
- বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ১৯৭০ সাল
বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ১৯৭১ সাল
জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ
বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ১৯৭২ সাল
জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল, মে, জুন, জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর, ডিসেম্বর
বাকশাল নিয় বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাৎকার : বাকশাল কর্মসূচীকে আমি প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করেছি
আও দেখুন: