অতল জলের গান : ২০০৩ সালে একবার কক্সবাজার গিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য কক্সবাজার সৈকতে সাপ্তাহিক ২০০০ এর ঈদ সংখ্যার ফটো-শুট।
২৩ সেপ্টেম্বরের সকালে যাত্রা করে, প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর কক্সবাজার পৌঁছানো।
যতদূর মনে আছে – দোতালা বাসটা প্রায় ঘণ্টা দুয়েক পর পর নষ্ট হচ্ছিল। সে ফাঁকে সবাই মিলে নেমে গিয়ে চা খাওয়া, হৈ চৈ করে গান গাওয়া।
যে যাত্রায় আমার বন্ধু সাইফুল হাসান রিকু’র ঘটকালিতে আমার স্ত্রী আজিজা আহমেন পলা’র সাথে প্রেমের শুরু।
আরেকটি প্রেম হয়েছিল; কঠিন প্রেম; গানের প্রেম। গান পাগল কনক আদিত্যের সাথে।
অতল জলের গান
জীবনে অনেক রংবেরং এর কাজ করেছি। সেবার হয়েছিলাম মডেল। পলার কাজ ছিল মডেলদের সমন্বয়। কনক ছিল শিল্প নির্দেশক।
শুটিঙের ফাঁকে, রাতে বিচের বালুতে হেঁটে – গান। বাউল, ভাটিয়ালি, ঠুমরী, কীর্তন, কাওয়ালী। আহা সে বড় রঙ্গিন রাত-দিন।
এরপর পথ চলায় আমরা কাজের পার্টনার, ব্যবসার পার্টনার হয়েছি।
রাত জেগে আমার বইয়ের প্রকাশনা, দেশাল দাঁড় করাবার কাজ করেছি।
আজও মন খারাপ হলে, রাতে ছুটে যাই বন্ধুর কাছে – গান শুনতে। একা, সপরিবারে বা সবান্ধবে।
নতুন কোন ইনস্ট্রুমেন্ট বানানো হলে, বা নতুন কোন কম্পোজিশন তৈরি হলে – কুটুম খবর দেয়।
পয়সা ধার করার দরকারেও প্রথম ফোন দেই তাকেই 😉
আমরা আজও দুজন দুজনকে -কুটুম – ডাকি।
কুটুম অনেক দিন থেকে দেশে-বিদেশে গান বাজনা করলেও এলবাম প্রকাশ করেনি।
আজ প্রকাশিত হচ্ছে কুটুম আর রাহুল কুটুমের প্রথম এলবাম। সাথে আরও আয়োজন থাকছে।
বেশিরভাগ যন্ত্র ওদের নিজেদের বানানো। সুর উঠে এসেছে বাংলার মাটি থেকে।
গত-দিন রাতে যখন সবাই মিলে এলবামের কাজ করছিলাম, প্রশ্ন করালাম – গানের কপি স্বত্ব কি হবে? তখন ওরা বিনয়ের সাথে বলল – কুটুম, আমরা এখনও গান ব্যাচার যোগ্য নিজেদের মনে করি না। তাই কপি স্বত্ব মুক্ত করে দিলাম। যে যেমন কপি করুক। গান মানুষের কাছে পৌঁছালেই হল। কেউ কিছু দিতে চাইলে অনলাইনে দিতে পারে।
খরচ উঠবে কিভাবে প্রশ্নের জবাবে বলল – এতদিনে গান গেয়ে যা আয় করছি, তা দিয়েই এলবাম প্রকাশ করলাম। মুদ্রনমুল্যে কিছু সিডি দেশাল ও যাত্রায় বিক্রির জন্য থাকবে।
এমন ভালবাসায় বাংলার গান বড় হতে থাক, চলে যাক দেশে বিদেশে, গানের প্রেম মানুষকে আরও কাছাকাছি আনুক। গান দিয়ে ভালবাসা হোক – মানুষের সাথে, দেশের সাথে, পৃথিবীর সাথে।
কুটুমদেরকে প্রথম এলবাম প্রকাশের অভিনন্দন !!!
জলের গানের গানের ভক্তদের জন্য শুভেচ্ছা !!!
আরও দেখুন: