সঙ্গীতের স্বর বা সুর নিয়ে আজকের আলাপ। স্বর দিয়েই তৈরি সঙ্গীত হয়। তাই স্বরকে সঙ্গীতের প্রধান বর্ণও বলা যেতে পারে। কথিত আছে – প্রথম সুর তৈরি হয়েছিল পাখির স্বর নকল করে । প্রথমে ছিল সাতটি স্বর । সাতটি জীবের কণ্ঠস্বর অনুকরণ করে । ময়ুর থেকে ‘সা’ । বৃষ থেকে ‘রে’ । ছাগল থেকে ‘গা’ । বক থেকে ‘মা’ । কোকিল থেকে ‘পা’ । ঘোড়ার থেকে ‘ধা’ । হাতির থেকে ‘নি’ । তারপর পাঁচটি উপ-স্বর যোগ হয় । এই বারটি স্বরের মিশ্রণে সৃষ্টি হয় রাগ । মনোরঞ্জন করা থেকে রাগ । মোট ছয়টি রাগ । মহাদেবের মুখ থেকে পাঁচটির সৃষ্টি । শ্রী, বসন্ত, ভৈরব, পঞ্চম আর মেঘ । পার্বতীর মুখ থেকে একটি । নট-নারায়ণ ।
খুব সহজভাবে বলা যায় – ২২টি শ্রুতির মধ্যে, বিশিষ্ট ১২ টি বিশিষ্ট শ্রুতিই হলো “স্বর”। এই শ্রুতিগুলোর মাধ্যমেই প্রায় সকল শ্রুতির প্রতিনিধিত্ব করা যায়।
সঙ্গীতের স্বর বা সুর
১২ টি স্বরের মধ্যে ৭ টি স্বরকে বলে “শুদ্ধ-স্বর”, এরা সর্ববিশিষ্ঠ স্বর।
অন্য ৫ টিকে বলে বিকৃত স্বর (এত সুন্দার সুরগুলোকে বিকৃত নাম দেয়াটা বড্ড অন্যায় হয়েছে)। সেই ৫ টি বিকৃত স্বরের মধ্যে – ৪ টি স্বর কোমল-স্বর, ১ টি কড়ির-স্বর। বিকৃত স্বরগুলো পাশের শুদ্ধ স্বরের কাছাকাছি।
১) “সড়জ” বা সংক্ষেপে “সা”। এটাকে কেউ কেউ “খাড়াজ” বা “খারাজ” বলেন।
২) “খষভ” বা সংক্ষেপে “রে”। .এটাকে কেউ কেউ “রিখাব” বা “রেখাব” বলেন।
৩) “কোমল খষভ” যাকে সংক্ষেপে প্রকাশ করা হয় “ঋ” দিয়ে।
৪) “গান্ধার” বা সংক্ষেপে “গা”।
৫) “কোমল গান্ধার” বা সংক্ষেপে “ঞ্জা”।
৬) “মধ্যম” বা সংক্ষেপে “মা”।
৭) “তীব্র মা” বা “কড়ির মা”। যেটাকে সংক্ষেপে প্রকাশ করা হয় “ক্ষা” দিয়ে।
৮) “পঞ্চম” সংক্ষেপে “পা”।
৯) “ধৈবত” বা সংক্ষেপে “ধা”।
১০) “কোমল ধৈবত” বা সংক্ষেপে “দা”।
১১) “নিষাদ” বা “নিখাদ” । .সংক্ষেপে প্রকাশ করা হয় “নি” বা “না” দিয়ে।
১২) “কোমল নিষাদ” বা সংক্ষেপে “ণি”। এই স্বরটিকে কেউ কেউ “নিখাদ” ও বলে।
গাইবার সময় সবাই সংক্ষিপ্ত রুপ গান। তবে বলা বা লেখার সময় সচরাচর পুরো নাম ব্যাবহার করা হয়। তাই নামগুলো মনে রাখার দরকার আছে।
আরও দেখুন: