হাসনাত আব্দুল হাইএর লেখার প্রতিক্রিয়া

১)

বুদ্ধিজীবী শব্দটা শুনলেই, প্রথমে মাথায় আসে ১৪ই ডিসেম্বর।
অভিভাবক হারানোর, স্বজন হারানোর বেদনা অনুভব করি।
সবচেয়ে বড় সম্পদ হারানোর কষ্ট অনুভব করি।

তাই যখন কোন বুদ্ধিজীবীর মুখের দিকে তাকাই – সে দৃষ্টি থাকে ভিন্ন।
ভালবাসার দৃষ্টিটা থাকে – মায়ের দিকে তাকানের মত।
স্নেহের দৃষ্টিটা থাকে – নিজের সন্তানের দিকে যেভাবে তাকাই।
শ্রদ্ধাটা থাকে – আমার দাদুর দিকে যেভাবে তাকাতাম।

আমার মনে হয় – আমার স্ত্রী, সন্তান, ভাই-বোনের মতই তারা আমাদের স্বজন।
তাদের সংস্পর্শে সুখ বোধ করি, নিরাপত্তা অনুভব করি।
তাদের লেখাগুলো – প্রেমের চিঠির মতই আবেগ নিয়ে পড়ি।
তাদেরকে যখন কেউ গালি দেয় – স্বজনের নামে খারাপ কিছু শোনার মতই দুঃখ পাই।

তাদের অনেকেই – অনেক আগে দেহত্যাগ করেও, আমার সৃতিতে আজও প্রাণবন্ত।
যেকোনো ভাল সময়ে – এখনও তাদেরকে দেখি, হাসিমুখে আমার পাশে দাড়িয়ে, কথনও দুরে হেঁটে যেতে।

সেই বুদ্ধিজীবীদের কারও চেহারা যখন – হাসনাত আবদুল হাই – হয়; তখন ঘৃণার পরিমাণটাও একই রকম তীব্র হয়।
ওদের ছায়া গায়ে লাগলে, সাবান দিয়ে গা ধুতে ইচ্ছে করে।
যেকোন ভাবে ওদের লেখা পড়ে ফেললে, প্রাণ পণে ভুলে যেতে ইচ্ছে করে।

হাসনাত দের মুখে আমি – কাদের মোল্লাকে দেখি।
তাদের পৃষ্ঠপোষকদের মুখ মানে – জামাত কে দেখি।
তাদের উকিলের মুখে দেখি – ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক এর প্রতিচ্ছবি।
হিংস্র হায়েনার মত চেহারা। লকলকে জিভের কোন ভয়ঙ্কর প্রাণী।
যেটা দেখে তীব্র ঘৃণা আসে। ভয়ে গায়ে কাঁটা দেয়।

 

২)
বহু বছরের সামরিক অপশাসনের ফল – হাসনাত আবদুল হাই- টাইপ বুদ্ধিজীবী।
আমাদের সেলেব্রিটি অগ্রজদের বেশিরভাগই এই ব্যবসার অংশীদার বা শিকার।

এই ষড়যন্ত্রকারীরা একা না, এদের এরকম ঘটনা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা না।
তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দীর্ঘ ষড়যন্ত্রের একটি ক্ষুদ্র প্রকাশ মাত্র।

এরকম হাজারো লেখা, হাজারো বক্তৃতা, হাজারো ঘটনা ঘটানো হয়েছে – তোমাদের, আমাদেরকে রাজনীতি থেকে দুরে রাখার জন্য।
রাজনীতিকে ঘৃণিত করা, রাজনীতিবিদদের প্রতি অশ্রদ্ধা তৈরি করা, জননেতাদের পচিয়ে দেয়ার – এ এক ভয়ানক ষড়যন্ত্র।
নিশ্চয় একদিন তরুণরাই এদের প্রাপ্য সুদে-আসলে বুঝিয়ে দেবে।

একটা জিনিস দেখে ভাল লাগছে – আজ অনেকেই এটা নিয়ে সচেতন ভাবে কথা বলছে। এক বছর আগেও এরকম ঘটনায় কেউ এত কথা বলে নাই।
নিশ্চয় কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি, অনেক কিছু বদলে দিয়েছে সমাজের। সে হাওয়া আরও অনেক কিছু বদলাবে।

আমি আশা বেঁধে রাখি। দীপ জ্বেলে রাখি 🙂