আমরা কি আসলেই চাই আমাদের দেশের গান বাজনা উন্নত হোক?

আমরা কি আসলেই চাই আমাদের দেশের গান বাজনা উন্নত হোক, কৌশিকী চক্রবর্তী বা রাহাত ফাহেত আলীর মতো বড় শিল্পী তৈরি হোক?

সবাই বলবে খুব চাই, ৫০০ চাই !!!
কিন্তু কোটি টাকার বিয়েতে একটা সঙ্গীত আসরের আয়োজন রাখি না।
উদ্বোধন বা কোন খুশির উপলক্ষে আমরা নানা খাতে টাকা ব্যয় করি, কোন সঙ্গীত শিল্পীকে দু পয়সা আয় করার সুযোগ করে দেই না।

শিল্পী আকাশ থেকে টপকে পড়বে না। সরকার কারখানায় বানিয়ে দিতে পারবে না।
আমাদের জীবনে তার প্রয়োজনীয়তা যদি প্রকাশ না করি, সে তৈরি হবেই কেন?

একজন পরিশীলিত সঙ্গীতের শিল্পী তৈরি হতে ১০/১৫ বছরের তপস্যা লাগে।
সেই পরিশ্রম ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হবার প্রস্তুতির চেয়ে বেশি বৈকি কম না।
আবার সেই পরিশ্রম করলেই যে ফল হবে, তার শত ভাগ গ্যারান্টিও নেই। কারণ ইঞ্জিনিয়ারের শুধু কারিগরি বিষয়টা শিখলেই চলে। শিল্পীর ক্ষেত্রে কারিগরি কাজটা শেখার পাশাপাশি, গানটা ধরা দেবার তপস্যা লাগে।

আমরা যদি তার মূল্য না দিতে জানি, তবে একজন মানুষ সেই ঝুঁকি কেন নেবে?
কেন কেউ তার বাচ্চাকে সেই ঝুঁকি নেবার অনুমতি দেবে?

আর শুধু আর্থিক গ্যারান্টিই নয়, শিল্পের ইউটিলিটিটাও তো থাকতে হবে!
একজন আর্কিটেক্টকে আপনি সারা জীবন নিয়মিত বেতন দিলেন, কিন্তু কোন বিল্ডিং বানাতে দিলেন না, বা তার বানানো কোন বিল্ডিং মানুষ দেখল না। তাতে ভালো আর্কিটেক্ট তৈরি হবে? হবে না।
সেভাবেই আমরা যদি শিল্পীর শিল্পের মূল্য না দেই, এপ্রিশিয়েট না করি, তবে শিল্পীও তৈরি হবে না।

খেলায় করবেন – কেউ যদি এই অকালে কোন সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেও, আমরা ধৈর্য ধরে শুনি না। পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা সেই মুহূর্তে পাশের জনকে বলা দরকার হয়। খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফোন ধরা দরকার হয়। একটু উঠে ঘুরে বেড়িয়ে আসার অদম্য ইচ্ছা চাপতে পারি না।
এসবে শিল্পী তো নিরুৎসাহিত হয়ই, আয়োজক বেচারাও হতাশ হয়।

আমরা কি আসলেই চাই আমাদের দেশের গান বাজনা উন্নত হোক?

 

আরও দেখুন: