জগজিৎ সিং এর জন্মদিন : “তুমকো দেখা তো ইয়ে খয়াল আয়া, জিন্দেগি ধুপ তুম ঘনা সায়া। তুম চলে যায়োগে তো সোচেঙ্গে, হামনে কেয়া খোয়া, হামনে কেয়া পায়া”। গজলের কথা উঠলেই কানের সামনে ভেসে ওঠে জগজিৎ সিং এর গলার আওওয়াজ।
‘ব্যারিটোন ভয়েস’ টো বটেই তার সঙ্গে তাঁর গায়কির চলনকে নদীর বাঁকের সঙ্গে তুলনা করলে কিছু ভুল হবে না। আজ সেই প্রয়াত গজল সম্রাট জগজিৎ সিং-এর জন্মদিন। আজ তিনি মানুষের মধ্যে শারীরিক ভাবে না থাকলেও, গজলের ইতিহাসে তিনি জীবিত। তিনি জীবিত বহু গানে, বহু সুরে।
১৯৪১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাজস্থানের শ্রীগঙ্গানগরের এক পরিবারে জন্ম নেন জগজিৎ সিং। সঙ্গীতের পরিবারেই জন্ম নেন তিনি। তাই উত্তরাধিকার সূত্রে তার এর রক্তেও বইছিল গান। তাঁর গানের হাতেখড়ি নিজের বাবার থেকেই। এরপর ১৯৬৫ ন্সালে তিনি চলে আসেন মুম্বই।
মুম্বই এসে ১৯৬৭ এ তার পরিচয় হয় গজল গায়িকা চিত্রার সঙ্গে। সেই চিত্রার সঙ্গেই দু’বছর পর সুর ও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। এরপর একসুঙ্গে গানের জগতে চলা শুরু করেন দু’জনে। একসঙ্গে বহু গানও গান তাঁরা। এরপর এক সন্তান হয় দুজনের।
১৯৯০ সালে একট গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান জগজিৎ-চিত্রার একমাত্র পুত্র। ছেলের বয়স হয়েছিল ১৮ বছর। ছেলের মৃত্যুশোক সামলাতে না পেরে নিজেকে গানের জগৎ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন।
কিন্তু গান থামাননি জগজিৎ। বরং তাঁর গানে বাড়তে থাকে আরও আবেগ। এরপর তাঁর প্রথম অ্যালবামটিও ব্যাপক হিট করে। গজলের দুনিয়ায় রীতমত এক নয়া মোড় আনেন তিনি। ছবিতে তিনি যখন গজল গাইতে শুরু করেন, তখন সাধারণ মানুষ, যারা গজল খুব একটা শুনতেন না তারাও গজল শোনা শুরু করে দেন।
প্রায় ১৫০টি গজল গানের অ্যালবাম বানিয়েছেন তিনি। ছবিতে গান গাইলেও তিনি ‘প্লেব্যাক’ সিংগার নয়, গজল গায়ক হিসেবেই মানুষের মধ্যে খ্যাতি পান। ২০১১ সালের ১০ অক্টোবর এই গজল সম্রাটের সুর চিরকালের মত থেমে যায়। মুম্বই এর লীলাবতী হাসপাতালে শেষ নিঃষ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।