আমি স্বপ্ন দেখি – মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র – আগস্ট ২৮, ১৯৬৩ – লিঙ্কন মেমোরিয়াল হল, ওয়াশিংটন ডিসি। “মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র” ১৭ মিনিটের এই বক্তৃতাটি করেন – ১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট মাসে ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত “মার্চ অন ওয়াশিংটন ফর জব এন্ড ফ্রিডম” নামে আমেরিকান-আফ্রিকানদের “সামাজিক অধিকার” প্রতিষ্ঠার জন্য লং মার্চ ও মহা-সমাবেশে। এই দিনটি ছিল আব্রাহাম লিংকন এর বন্ধনমুক্তির ঘোষণা (Emancipation Proclamation) সই করার ১০০ বছর পূর্তি।
আমি স্বপ্ন দেখি – মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র
এই সমাবেশ আমেরিকার ইতিহাসে “সামাজিক অধিকার” প্রতিষ্ঠায় এটি সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মহা-সমাবেশ। এই সমাবেশে এ যোগ দেবার জন্য ২০০০ বাস, ২১ টি স্পেশাল ট্রেন, ১০ টি এয়ারলাইন্স এর সকল ফ্লাইট ও অসংখ্য গাড়িতে করে মানুষ ওয়াশিংটনে এসেছিল। ওয়াশিংটন মনুমেন্ট থেকে লিঙ্কন মেমোরিয়াল পর্যন্ত যাত্রায় প্রায় ২ লক্ষ জনতা জাতিগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং কাজ ও সামাজিক অধিকারের দাবীতে এক মার্চে অংশগ্রহণ করে। মুল আন্দোলন আফ্রিকান আমেরিকানদের হলেও, ২লক্ষ সমর্থকের মধ্যে ও ৫০,০০০ ছিল সাদা মানুষ। সকল ধর্মের, সকল শ্রেণীর মানুষের সাথে এই সমাবেশে Harry Belafonte, Marlon Brando, Sammy Davis, James Garner, Bob Dylan এবং Joan Baez এর মত তারকারাও এসেছিল।
ফিলিপ রেডলফ (ইউনিয়ন নেতা) এধরনের একটি মার্চ ১৯৪১ সালের কোন একটি সময় সংগঠিত করার চেষ্টা করেছিলেন। সেই যাত্রা ততটা বড় করে করা সম্ভব না হলেও পেসিডেন্ট রুজভেল্ট “ফেয়ার এমপ্লয়মেন্ট প্রাকটিস (Executive Order 8802 – Fair Employment Act) করতে বাধ্য হন। পরে ৬০ এর দশকে যখন সামাজিক মুক্তির আন্দোলন বেগবান হয় তখন পুনরায় এই আয়োজনের চেষ্টা করা হয়।
“মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র” ১৭ মিনিটের এই বক্তৃতাটির মাধ্যমে, ঘোষণা দেন “জাতিগত বৈষম্যের দিন শেষ করার”, ডাক দেন সমতার। “আই হ্যাভ এ ড্রিম” নামে এই বক্তৃতাটি পরিচিত হয়েছে। তবে অনেকেই বলেন বক্তৃতাটি লেখার শুরুর দিকে এই শিরনাম ছিল “”Normalcy, Never Again” যা বক্তৃতাটি লিখে শেষ করার পর পরিবর্তন করা হয় এবং পরিবর্তিত সংস্করণটিই পড়া হয়। এই বক্তৃতাটি ভোটের মাধ্যমে ১৯ শতকের সেরা বক্তৃতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। “আই হ্যাভ এ ড্রিম” ভাষণটি শুধুমাত্র আমেরিকার ইতিহাসেই নয় সারা পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
Transcript of Martin Luther King’s ‘I Have a Dream’ speech in English
বাংলা অনুবাদ:
আজ আমি আপনাদের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আনন্দিত, কারণ এই দিনটি আমাদের জাতির ইতিহাসে স্বাধীনতার জন্য সবচেয়ে মহান প্রদর্শনের দিন হিসেবে ইতিহাসে স্বীকৃত হবে।
একশো বছর আগে, এক মহান আমেরিকান, যার প্রতীকী ছায়ার নিচে আমরা আজ দাঁড়িয়ে আছি, ‘এমানসিপেশন প্রোক্লেমেশন’-এ স্বাক্ষর করেন। এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাটি ছিল লক্ষ লক্ষ কৃষ্ণাঙ্গ দাসের জন্য একটি বিশাল আশার আলো, যারা দীর্ঘদিন ধরে নির্মম অন্যায়ের আগুনে পুড়ছিল। এটি ছিল বন্দিত্বের দীর্ঘ রাত্রির শেষে একটি আনন্দঘন প্রভাত।
কিন্তু একশো বছর পরে, কৃষ্ণাঙ্গরা এখনও মুক্ত নয়। একশো বছর পরে, কৃষ্ণাঙ্গদের জীবন এখনও বিচ্ছিন্নতার শৃঙ্খল এবং বৈষম্যের শেকলে দুঃখজনকভাবে বাঁধা। একশো বছর পরে, কৃষ্ণাঙ্গরা এখনও বসবাস করছে দারিদ্র্যের একটি একাকী দ্বীপে, চারপাশে বস্তুগত সমৃদ্ধির বিশাল মহাসাগর।
একশো বছর পরে, কৃষ্ণাঙ্গরা এখনও আমেরিকান সমাজের কোণে কোণে নিঃস্বভাবে পড়ে রয়েছে, এবং তারা নিজেদেরই দেশ থেকে নির্বাসিত এক মানুষ হিসেবে বেঁচে আছে। তাই আমরা আজ এখানে এসেছি এই লজ্জাজনক পরিস্থিতিকে নাটকীয়ভাবে তুলে ধরতে।
এক অর্থে আমরা আমাদের জাতির রাজধানীতে এসেছি একটি চেক ভাঙাতে। যখন আমাদের প্রজাতন্ত্রের স্থপতিরা সংবিধান ও স্বাধীনতার ঘোষণা-পত্রে মহান শব্দগুলি রচনা করেছিলেন, তখন তারা একটি প্রমিসরি নোটে স্বাক্ষর করেছিলেন—যা আমেরিকার প্রতিটি নাগরিকের উত্তরাধিকার হিসেবে পাওয়ার কথা।
এই নোটটি ছিল এমন একটি অঙ্গীকার যে, সকল মানুষ—হ্যাঁ, শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গ উভয়েই—”জীবন, স্বাধীনতা এবং সুখের সন্ধান” নামক অবিচ্ছেদ্য অধিকারের গ্যারান্টি পাবে। আজ পরিষ্কার যে, আমেরিকা এই প্রতিশ্রুতির ব্যর্থতা দেখিয়েছে, অন্তত তার বর্ণবাদের শিকার নাগরিকদের ক্ষেত্রে। এই পবিত্র দায়িত্ব পালনের বদলে, আমেরিকা কৃষ্ণাঙ্গদের দিয়েছে একটি জাল চেক, একটি এমন চেক যা ফেরত এসেছে “পর্যাপ্ত তহবিল নেই” এই ছাপ নিয়ে।
কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি না যে, ন্যায়বিচারের ব্যাংক দেউলিয়া। আমরা বিশ্বাস করি না যে, এই জাতির বিশাল সম্ভাবনার ভাণ্ডারে পর্যাপ্ত তহবিল নেই। তাই, আমরা এখানে এসেছি এই চেক ভাঙাতে, একটি চেক যা আমাদের মুক্তির ঐশ্বর্য এবং ন্যায়বিচারের নিরাপত্তা এনে দেবে।
আমরা এই পবিত্র স্থানে এসেছি আমেরিকাকে “বর্তমানের তীব্র তাগিদ”-এর কথা স্মরণ করিয়ে দিতে। এখন শীতল হওয়ার বিলাসিতা নেওয়ার সময় নয়, ধীরে ধীরে এগোনোর ঘুমপাড়ানি ওষুধ গ্রহণের সময় নয়। এখনই সময় গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের। এখনই সময় বিভেদের অন্ধকার ও নিরাশ উপত্যকা থেকে জাতিগত ন্যায়ের আলোকিত পথে ওঠার। এখনই সময় জাতিকে জাতিগত অন্যায়ের দোদুল্যমান বালুকা থেকে ভ্রাতৃত্বের দৃঢ় পাথরে তুলে আনার। এখনই সময় ন্যায়বিচারকে ঈশ্বরের সব সন্তানের জন্য বাস্তব করে তোলার।
এই মুহূর্তের তীব্র প্রয়োজনীয়তাকে উপেক্ষা করা জাতির জন্য মারাত্মক ভুল হবে। কৃষ্ণাঙ্গদের ন্যায্য অসন্তোষের এই দগদগে গ্রীষ্ম অতিক্রান্ত হবে না, যতক্ষণ না স্বাধীনতা ও সাম্যের সতেজ শরৎ এসে না পৌঁছায়। ১৯৬৩ কোনো সমাপ্তি নয়, এটি একটি সূচনা। যারা মনে করেন কৃষ্ণাঙ্গরা কেবল কিছুটা ক্ষোভ ঝেড়ে এখন শান্ত হয়ে যাবে, তারা ভয়ানকভাবে ভুল করবেন—যদি জাতি আগের মতোই চলতে থাকে। আমেরিকায় তখন পর্যন্ত শান্তি বা স্থিরতা ফিরে আসবে না, যতক্ষণ না কৃষ্ণাঙ্গদের নাগরিক অধিকার স্বীকৃত হয়। বিদ্রোহের ঝড় জাতির ভিত কাঁপিয়ে দেবে যতক্ষণ না ন্যায়ের উজ্জ্বল দিন উদিত হয়।
কিন্তু আমার জাতির মানুষদের উদ্দেশ্যে আমি একটি কথা বলতে চাই, যারা এখন সুবিচারের প্রাসাদে প্রবেশের উষ্ণ প্রান্তদ্বারে দাঁড়িয়ে আছে: আমাদের ন্যায্য অধিকার অর্জনের প্রক্রিয়ায়, আমরা যেন অন্যায় কাজে অপরাধী না হই। আমরা যেন স্বাধীনতার জন্য আমাদের তৃষ্ণা ঘৃণা ও তিক্ততার পানপাত্র থেকে মিটানোর চেষ্টা না করি। আমাদের সংগ্রাম সবসময় মর্যাদা ও শৃঙ্খলার উচ্চ স্তরে পরিচালিত হতে হবে। আমাদের সৃজনশীল প্রতিবাদ যেন কখনোই শারীরিক সহিংসতায় পরিণত না হয়। বারবার আমাদেরকে শারীরিক শক্তির মোকাবেলায় আত্মার শক্তিতে উঠতে হবে রাজসিক উচ্চতায়।
নিগ্রো সম্প্রদায়ে যে অসাধারণ নতুন সাহস ও সংগ্রামী মানসিকতা ছড়িয়ে পড়েছে, তা যেন আমাদের শ্বেতাঙ্গদের প্রতি অবিশ্বাসে না পরিণত হয়, কারণ আজকের এই সমাবেশে উপস্থিত বহু শ্বেতাঙ্গ ভাই প্রমাণ করেছেন—তাঁদের ভবিষ্যৎ আমাদের ভবিষ্যতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাঁরা বুঝতে শুরু করেছেন, তাঁদের স্বাধীনতাও আমাদের স্বাধীনতার সঙ্গেই আবদ্ধ।
আমরা একা চলতে পারি না।
আর যখন আমরা একসঙ্গে চলি, তখন আমাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে—আমরা সবসময়ই সামনে এগিয়ে যাব। আমরা পিছনে ফিরে যেতে পারি না।
অনেকেই এখন সিভিল রাইটস আন্দোলনের অনুসারীদের জিজ্ঞাসা করছে, “তোমরা কখন সন্তুষ্ট হবে?”
আমরা কখনোই সন্তুষ্ট হতে পারি না, যতক্ষণ না নিগ্রোরা পুলিশি বর্বরতার অমানবিক ভয়াবহতার শিকার হচ্ছে। আমরা কখনোই সন্তুষ্ট হতে পারি না, যদি দীর্ঘ ভ্রমণে ক্লান্ত শরীর নিয়ে আমরা হাইওয়ের মোটেল বা শহরের হোটেলে আশ্রয় না পাই। আমরা সন্তুষ্ট হতে পারি না, যতক্ষণ নিগ্রোদের চলাচলের একমাত্র দিগন্ত হয় ছোট গেটো থেকে বড় গেটোতে স্থানান্তর। আমরা সন্তুষ্ট হতে পারি না, যতক্ষণ আমাদের সন্তানদের আত্মমর্যাদা কেড়ে নেওয়া হয় এবং তাদের সম্মান ছিনিয়ে নেওয়া হয় “শুধু শ্বেতাঙ্গদের জন্য” লেখা সাইনবোর্ড দ্বারা। আমরা সন্তুষ্ট হতে পারি না, যদি মিসিসিপিতে কোনো নিগ্রো ভোট দিতে না পারে, এবং নিউ ইয়র্কের নিগ্রো মনে করে তার ভোট দেওয়ার মতো কিছুই নেই। না, না, আমরা সন্তুষ্ট নই, এবং আমরা কখনোই সন্তুষ্ট হব না যতক্ষণ না “ন্যায়বিচার নদীর জলের মতো প্রবাহিত হয় এবং ধার্মিকতা প্রবল স্রোতের মতো গর্জে উঠে।”
আমি অজ্ঞ নয় যে তোমাদের অনেকেই কঠিন দুঃখ-কষ্ট ও দুর্দশা পেরিয়ে এখানে এসেছো। কেউ কেউ সোজা সংকীর্ণ কারাগার থেকে এসেছো। কেউ কেউ এসেছো সেই অঞ্চল থেকে, যেখানে স্বাধীনতার সন্ধান তোমাদের উপর অত্যাচারের ঝড় বইয়ে দিয়েছে এবং পুলিশি বর্বরতার ঝড়ো হাওয়ায় তোমাদের টালমাটাল করে দিয়েছে। তোমরা সৃজনশীল কষ্টভোগের অভিজ্ঞ যোদ্ধা। বিশ্বাস নিয়ে কাজ চালিয়ে যাও—অর্জনহীন কষ্টও মুক্তির পথ তৈরি করতে পারে।
ফিরে যাও মিসিসিপিতে, ফিরে যাও আলাবামায়, ফিরে যাও সাউথ ক্যারোলিনায়, ফিরে যাও জর্জিয়ায়, ফিরে যাও লুইজিয়ানায়, ফিরে যাও আমাদের উত্তরাঞ্চলের শহরগুলোর বস্তি ও গেটোগুলোতে, এই বিশ্বাস নিয়ে যে এই পরিস্থিতি কোনো না কোনোভাবে বদলাবে, এবং বদলাবেই।
আমি তোমাদের বলছি, বন্ধুেরা, হতাশার উপত্যকায় নিমজ্জিত হয়ে থেকো না।
এইজন্যই আজকের ও আগামীর সমস্ত কষ্টের মুখোমুখি হয়েও, আমার এখনো একটি স্বপ্ন আছে। এটি এমন একটি স্বপ্ন, যা আমেরিকান স্বপ্নের গভীরে গাঁথা।
আমার একটি স্বপ্ন আছে — যে একদিন এই জাতি জাগবে এবং তার মর্মবাণীর সত্যিকারের তাৎপর্য অনুযায়ী জীবন যাপন করবে:
“আমরা এই সত্যগুলোকে স্বতঃসিদ্ধ বলে মেনে নিই — যে সকল মানুষ সমানভাবে সৃষ্টি হয়েছে।”
আমার একটি স্বপ্ন আছে — যে একদিন জর্জিয়ার লাল পাহাড়গুলিতে, প্রাক্তন দাসদের সন্তান এবং প্রাক্তন দাস-মালিকদের সন্তান একসাথে ভাইয়ের মতো বসতে পারবে ভ্রাতৃত্বের টেবিলে।
আমার একটি স্বপ্ন আছে — যে একদিন মিসিসিপির মতো একটি রাজ্য, যে এখনো অন্যায়ের উত্তাপে পুড়ে যাচ্ছে, নিপীড়নের দহনজ্বালায় কষ্ট পাচ্ছে, একদিন তা রূপান্তরিত হবে স্বাধীনতা ও সুবিচারের এক মরুদ্যানে।
আমার একটি স্বপ্ন আছে — যে একদিন আমার চারটি ছোট সন্তান এমন একটি জাতির মধ্যে বাস করবে যেখানে তাদের বিচার করা হবে না তাদের গায়ের রঙ দেখে, বরং তাদের চরিত্রের গভীরতা দেখে।
আজ আমার একটি স্বপ্ন আছে!
আমার একটি স্বপ্ন আছে — যে একদিন আলাবামার মতো রাজ্যে, যেখানে আজও নির্মম বর্ণবিদ্বেষীদের দাপট, যেখানে গভর্নরের ঠোঁট এখনো “বিচ্ছিন্নতা” ও “অবৈধতা”র বিষাক্ত শব্দে ভিজে আছে—ঠিক সেই আলাবামাতেই একদিন ছোট ছোট কালো ছেলেমেয়েরা ছোট ছোট সাদা ছেলেমেয়েদের সঙ্গে হাত ধরবে ভাইবোনের মতো।
আজ আমার একটি স্বপ্ন আছে!
আমার একটি স্বপ্ন আছে — যে একদিন প্রতিটি উপত্যকা হবে উচ্চাসন, প্রতিটি পাহাড় ও পর্বত হবে সমতল, বন্ধুর স্থানগুলো হবে মসৃণ, এবং আঁকাবাঁকা পথগুলো হবে সোজা; “আর প্রভুর মহিমা প্রকাশিত হবে এবং সমস্ত মানুষ একসঙ্গে তা প্রত্যক্ষ করবে।”²
এই হলো আমাদের আশা।
এই হলো সেই বিশ্বাস, যা নিয়ে আমি দক্ষিণে ফিরে যাচ্ছি।
এই বিশ্বাস নিয়ে, আমরা হতাশার পাহাড় থেকে খোদাই করে বের করে আনতে পারব একটুকরো আশা।
এই বিশ্বাস নিয়ে, আমরা আমাদের জাতির কাকফোতা বিরোধগুলিকে রূপান্তর করতে পারব এক অপূর্ব ভ্রাতৃত্বের সিম্ফনিতে।
এই বিশ্বাস নিয়ে, আমরা একসাথে কাজ করতে পারব, একসাথে প্রার্থনা করতে পারব, একসাথে সংগ্রাম করতে পারব, একসাথে জেলে যেতে পারব, একসাথে স্বাধীনতার জন্য দাঁড়াতে পারব—এই জেনে যে একদিন আমরা অবশ্যই মুক্ত হব।
আর সেই দিনই হবে সেই দিন — সেই দিন যখন ঈশ্বরের সমস্ত সন্তান গাইতে পারবে নতুন অর্থে:
“আমার দেশ, তোমার কথাই বলি আমি,
মাধুর্যময় স্বাধীনতার ভূমি — তোমারই গুণ গাই।
যে ভূমিতে আমার পিতৃপুরুষেরা জীবন দিল,
যে ভূমি তীর্থযাত্রীদের গৌরবের,
প্রত্যেক পাহাড়ের চূড়া থেকে ধ্বনিত হোক — স্বাধীনতার গান!”
আর আমেরিকা যদি সত্যিকারের মহান জাতি হতে চায়, তবে এই কথাগুলো সত্যে পরিণত করতেই হবে।
আর তাই, স্বাধীনতার ঘণ্টাধ্বনি শোনা যাক নিউ হ্যাম্পশায়ারের বিশাল পাহাড়চূড়া থেকে—
স্বাধীনতার ঘণ্টাধ্বনি বাজুক নিউ ইয়র্কের মহাশক্তিধর পর্বতমালা থেকে।
স্বাধীনতার ঘণ্টাধ্বনি বাজুক পেনসিলভানিয়ার ক্রমবর্ধমান অ্যালেগেনি পাহাড় থেকে।
স্বাধীনতার ঘণ্টাধ্বনি বাজুক কলোরাডোর তুষারঢাকা রকি পর্বতমালা থেকে।
স্বাধীনতার ঘণ্টাধ্বনি বাজুক ক্যালিফোর্নিয়ার মনোরম ঢালু পাহাড় থেকে।
কিন্তু শুধু এতেই থেমে থাকা যাবে না:
স্বাধীনতার ঘণ্টাধ্বনি বাজুক জর্জিয়ার স্টোন মাউন্টেন থেকে।
স্বাধীনতার ঘণ্টাধ্বনি বাজুক টেনেসির লুকআউট মাউন্টেন থেকে।
স্বাধীনতার ঘণ্টাধ্বনি বাজুক মিসিসিপির প্রতিটি পাহাড় ও ঢিবি থেকে।
দেশের প্রতিটি পাহাড়চূড়া থেকে—স্বাধীনতার ঘণ্টাধ্বনি বাজুক!
আর যখন তা ঘটবে, যখন আমরা সত্যিই স্বাধীনতার ঘণ্টাধ্বনি বাজতে দেব, যখন আমরা তা প্রতিটি গ্রাম ও ছোট ছোট বসতি, প্রতিটি রাজ্য ও প্রতিটি শহর থেকে বাজতে দেব—
তখনই আমরা ত্বরান্বিত করতে পারব সেই মাহেন্দ্রক্ষণ,
যখন ঈশ্বরের সব সন্তান—কালো আর সাদা,
ইহুদি আর অ-ইহুদি,
প্রটেস্ট্যান্ট আর ক্যাথলিক—
সকলেই একে অপরের হাত ধরে বলতে পারবে সেই পুরনো নিগ্রো গানের বাণী:
“অবশেষে আমরা মুক্ত! অবশেষে আমরা মুক্ত!
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, আমরা এখন সত্যিই মুক্ত!”
আরও দেখুন: