আমি আমার সব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা তরুণ-তরুণীদের জিজ্ঞেস করেছি-
“একাদশ সংসদে নির্বাচিত এমপির কাছে তাদের প্রত্যাশা কি হবে?”
সম্প্রতি তাদের প্রত্যাশা বিষয়ে একটি সার্ভেও করেছি। সেটির একটা যোগফল প্রকাশ করলাম:
১. কুমারখালী-খোকসার তরুণ প্রজন্মের শিক্ষা, দক্ষতা, কর্মসংস্থান, বিনোদন বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট লিখিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। সেই পরিকল্পনাতে সুনির্দিষ্ট সময়সহ ক্রমশঃ বেকারত্ব নিরসনের পরিকল্পনা থাকতে হবে।
২. শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি, তাদের সঠিক জবাবদিহিতা ও অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নয়ন করতে হবে। প্রকৃত গরিব শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা বৃত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. প্রতিটি ইউনিয়নে অন্তত একটি করে কারিগরি দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। যেখানে ইউনিয়নের সকল তরুণ তরুণী প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক দক্ষতার প্রশিক্ষণ নিতে পারবে।
৪. সফল পেশাজীবীদের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ পেশার জন্য সবাইকে দিক নির্দেশনা দিতে হবে। সফল পেশাজীবীদের সাথে মেশার সুযোগ করে দিতে হবে।
৫. সবার জন্য শুদ্ধ বাংলা, ইংরেজি ভাষা ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
৬. প্রয়োজনীয় খেলার মাঠ, ক্রীড়া সরঞ্জামের ব্যবস্থা করতে হবে। খেলার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। নিয়মিত ম্যাচ হবার উদ্যোগ নিতে হবে। ভালো খেলোয়াড়দের জাতীয় পর্যায়ে খেলার সুযোগ করে দিতে হবে।
৭. সুস্থ ধারার সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ ও চর্চার সুযোগ করতে হবে।
৮. অকারণে প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। রাজনীতির ছত্রছায়ায় মাস্তানি বা পেশি ব্যবহারের বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি নিতে হবে। কাউকে ভয় পেয়ে যেন তাদের চলতে না হয়।
৯. মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ করতে হবে।
১০. ঘুষমুক্ত প্রতিযোগিতামূলক চাকরীর ব্যবস্থা করতে হবে।
১১. যে ১০০ স্পেশাল ইকোনমিক জোনের পরিকল্পনা সরকার নিয়েছে, তার একটি অবশ্যই কুমারখালী-খোকসায় স্থাপন করতে হবে। যেখানে বহু বেকার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।
১২. শিল্পোদ্যোক্তাদের কুমারখালী-খোকসায় মিল-ফ্যাক্টরি করার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে হবে এবং সহায়তা করতে হবে।
১৩. শিক্ষা, দক্ষতা, কর্মসংস্থান, সংস্কৃতি বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে হবে। সেরাদের উৎসাহব্যঞ্জক ভালো পুরস্কার দিতে হবে। তাদের জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে।
১৪. বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের সঠিক ইতিহাস ও তাদের আগের বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস জানার সুযোগ করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে হবে।
১৫. ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে আরও সোচ্চার হতে হবে। জনপ্রতিনিধির সকল প্রতিনিধিগণ পুরুষ, তাই তাদের কাছে সব সমস্যা জানানো কঠিন। তাই তরুণীদের সহায়তার একটি নারী ডেস্ক স্থাপন।
১৬. তরুণদের নিয়ে এমপির যে ভাবনা আছে এটা তার কাজে যেন বোঝা যায়।
১৭. টাকা পয়সা খেয়ে অন্যায় সামাজিক বিচার বন্ধ করতে হবে।
১৮. যারা রাজনীতির সাথে জড়িত, তারা গ্রুপিং রাজনীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত, তাই এই গ্রুপিং রাজনীতির অবসান চায়।
১৯. এমপিকে সমস্যা জানানোর জন্য একটি মোবাইল এ্যাপস, ওয়েবসাইট, কল সেন্টার ও ইমেইল ঠিকানা। যেটা নিয়মিত চেক করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২০. গ্রাম পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড পৌঁছে দিতে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ নিতে হবে।
তরুণেরা মনে করে রাস্তাঘাট, ব্রিজ উন্নয়ন, বিদ্যুতায়ন এগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ। এটা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি খুব একটিভ না হলেও, প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বের কারণে হয়ে যাবে। তারা দেখতে চায়- এমপি বাড়তি কি সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করলেন? কুমারখালী-খোকসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দের বাইরে বাড়তি কি আনলেন?
তরুণেরা তাদের দক্ষতা ও কর্মসংস্থানকে আগামী দিনের প্রধান সমস্যা মনে করে। তারা মনে করে, সবাই সম্মানজনক নিয়মিত আয় করলে, বাকি অনেক সমস্যার এমনিতেই সমাধান হয়ে যাবে। তারা ভাবে, তারা ভোটের সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি হবার পরেও, তাদের মতামত-সুবিধা-অসুবিধা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখেননা বড়রা।
জানিনা কিছু বাদ পড়ে গেল কি না। মনে করলে তোমরা যোগ করো।
“একাদশ সংসদে নির্বাচিত এমপির কাছে তাদের প্রত্যাশা কি হবে?”

একাদশ সংসদে নির্বাচিত এমপির কাছে কুমারখালী-খোকসার তরুণ-তরুণীদের প্রত্যাশা কি?
আরও পড়ুন:
উইকিপিডিয়া : কুমারখালী