পশুপালন । পেশা পরিচিতি | পেশা পরামর্শ সভা : বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে কৃষির অবদান অনস্বীকার্য। দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যের চাহিদা মেটানোর জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছে এ দেশের কৃষিবিদরা। কৃষি খাতের একটি অন্যতম অংশ হচ্ছে প্রাণিসম্পদ। খাদ্যতালিকার একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো প্রাণিজ আমিষ। মূলত এই প্রাণিসম্পদকে নিয়েই পড়াশোনা করেন পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রাণিজ আমিষের চাহিদা মেটাতে পশুপালন বা অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি গ্র্যাজুয়েটদের অবদান চোখে পড়ার মতো। সুফি ফারুক এর পেশা পরামর্শ সভার জন্য বিস্তারিত লিখেছেন – শামস্ বিশ্বাস
পশুপালন এর সম্ভাবনা :
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগ শিল্প পোলট্রি পশুপালন অনুষদের অধীনে। এ ছাড়া সেই অনুষদের অধীনে রয়েছে ডেইরি বিজ্ঞান, পশুবিজ্ঞান, পশুপুষ্টি এবং পশু প্রজনন ও কৌলিতত্ত্ব বিভাগ। তাই এই অনুষদের গ্র্যাজুয়েটদের কর্মক্ষেত্র ব্যাপক ও বিস্তৃত। রয়েছে স্কলারশিপসহ বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ। কর্মসংস্থানের জন্য দেশে তো বটেই, দেশের বাইরেও চাকরির সুযোগ রয়েছে। ফলে পেশামুখী ক্যারিয়ার গড়তে এ বিষয়টির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে তরুণ শিক্ষার্থীরা। ভালো ফলাফলের মাধ্যমে দেশে ও দেশের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার সুযোগ তো থাকছেই। এ ছাড়া উদ্যোক্তা হিসেবে নিজে কিছু করার অফুরন্ত সুযোগ।

পড়াশোনা :
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (www.bau.edu.bd) এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (www.pstu.ac.bd)। এছাড়া কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় পশু পালন এর কোর্স রয়েছে।
কাজের সুযোগ :
দেশে পশু পালন অনুষদের গ্র্যাজুয়েটদের চাহিদা অনেক। প্রতিবছর যে পরিমাণ গ্রাজুয়েট বের হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি গ্র্যাজুয়েটদের রয়েছে বহুমাত্রিক এবং ব্যাপক বিস্তৃত কর্মক্ষেত্র। পশু পালন অনুষদ থেকে পাস করে বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের মাধ্যমে বিসিএস পরীক্ষায় দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কর্মকর্তা, হাঁস-মুরগি উন্নয়ন কর্মকর্তাসহ ট্রেনিং ইন্সটিটিউটে প্রভাষক হিসেবে যোগ দিতে পারে। বিসিএসে কোটা ক্যাডার ছাড়াও রয়েছে সাধারণ ক্যাডার হওয়ার সুযোগ।

পশু পালন অনুষদ থেকে পড়াশোনা করে বিভিন্ন চিড়িয়াখানায় ক্যাডারে কিউরেটর ও নন-ক্যাডারে জু অফিসার হিসেবে চাকরি করা যায়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে অগ্রাধিকারসহ বিভিন্ন ব্যাংক ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোয় নিজেদের অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ক্যারিয়ার গড়ছেন এই অনুষদের বহু গ্র্যাজুয়েট। এ ছাড়া বাংলাদেশ প্রাণিজসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটে (বিএলআরআই) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিচ্ছে পশু পালন অনুষদের গ্র্যাজুয়েটরা।
ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের গ্র্যাজুয়েটদের সরকারি প্রতিষ্ঠান (যেমন : মিল্ক ভিটা) বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (যেমন : প্রাণ, ব্র্যাক, আড়ং ডেইরি, কাজী ফার্মস, আফতাব বহুমুখী ফার্ম, ড্যানিশ, ড্যানিডা, আমেরিকান ডেইরি ইত্যাদি) উচ্চ বেতনে নিয়োগ দিয়ে থাকে। অনেকেই পশুপালন বিষয়ে অর্জিত জ্ঞানকে ব্যক্তিগত কাজে লাগিয়ে পোলট্রি ও ডেইরি খামার গড়ে তুলেছে। আর এই পোলট্রি ও ডেইরি খামারকে তারা নিজেদের কর্মসংস্থানের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছে।
আয়-রোজগার :
দেশে অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি গ্র্যাজুয়েট কম থাকায় কোম্পানিগুলোয় যে কোনো সময় তারা ভালো বেতনের চাকরিতে যোগ দিতে পারে। সাধারণত শিক্ষানবিশ অবস্থায় ২৫-৩০ হাজার টাকা বেতন পাওয়া যায়। বলা হয়, সুন্দর ক্যারিয়ারের জন্য এ অনুষদের শিক্ষার্থীদের কোনো চিন্তা করতে হয় না।
আরও পড়ুন: