ঠুমরি । উপশাস্ত্রীয় গীত ধারা । হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত | অসুরের সুরলোকযাত্রা সিরিজ

ঠুমরি (কেউ কেউ ঠুংরি বলেন, কেন বলেন জানি না) হিন্দুস্থানি উপশাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয় ধারা।  লোকে বলে শত বছর আছে লাখনও এর শেষ নবাব ওয়জিদ আলি শাহ যিনি “আখতার পিয়া” নামেও পরিচিত ছিলেন, তিনিই প্রথম এই গায়নরীতির স্থাপনা করেন।

ঠুমরি । উপশাস্ত্রীয় গীত ধারা । হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত

ঠুমরি । উপশাস্ত্রীয় গীত ধারা । হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত

ঠুমরী চঞ্চল স্বভাবের ভাব প্রধান গান। এ গানে প্রেম, বিরহ, বিবাদ, অপেক্ষা, অভিমান, অভিযোগ, মিলনের অভিব্যক্তিগুলো সুর ও বানীর সংমিশ্রণে ফুটিয়ে তোলা হয়। এজন্য শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের চেয়ে ঠুমরী অনেক বেশি বানী প্রধান। প্রতিটি শব্দ স্পষ্ট করে উচ্চারণ করা হয় এবং প্রতিটি শব্দের আবেগকে সময় নিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়। ঠুমরী ব্রজ, হিন্দি, উর্দু, পাঞ্জাবী ভাষায় রচিত হয়েছে। এছাড়া বাংলা সহ অন্যান্য কিছু ভাষায়ও কিছু রচনা আছে।

ঠুমরীতে সাহিত্য বা লিরিক খুব লম্বা হয় না। অল্প লিরিক বা শব্দকে গেয়ে বিভিন্ন ভাবে ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমেই হয় ঠুমরীর উপস্থাপন হয়।

ঠুমরীতে শৃঙ্গার রস প্রধান। শৃঙ্গারের সব রং রুপর বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন ক্যানভাসে আঁকেন শিল্পি।

সচরাচর সহজ তাল (যেমন: দাদরা, কাহারবা, দিপচন্ডি, যততাল। তবে স্থায়ি অন্তরাতে কাজ করার পরে তাল বদলাতে পারে, শেষ করার আগে আবার শুরুর তালে ফিরে যেতে পারে) এবং হালকা রাগে বাঁধা হয় ঠুমরী (যেমন: খাম্বাজ, দেশ, তিলক-কামোদ, তিলং, পিলু, কাফি, ভৈরবী, ঝিন্ঝটি, যোগীয়া, পাহাড়ী) ।   রাগের শুদ্ধতার চেয়ে বেশি নজর দেয়া হয় বোলের বা অভিব্যক্তির প্রকাশের উপরে। ঠুমরীর স্থায়ীর পাশাপাশি একাধিক অন্তরা থাকে। খাটকা, মুড়কি, গিটকিরি এবং পুকার – ঠুমরী গানের প্রধান অঙ্গ। গানের বানীর সাথে এগুলো মিশিয়ে সুন্দর বোল তৈরি করে উপস্থাপন করা হয়। এজন্য একই লাইনের কাব্য বহু অভিব্যক্তিতে প্রকাশ প্রায়।

ঠুমরী আলাদা করে শোনা হয়। আবার অনেকসময় ভারী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের গান/বাজনা শেষে ঠুমরি দিয়ে (খাবার শেষে ডেসার্ট এর মতো করে) শেষ করা হয়। কণ্ঠে গাইবার পাশাপাশি অনেকে যন্ত্রেও ঠুমরী বাজিয়ে থাকেন। আর নৃত্যের সাথে ঠুমরির দারুণ বন্ধন তো আছেই।

লোকগীতির “ঠমক” চাল থেকে ঠুমরি শব্দের উৎপত্তি বলে শোনা যায়। উনিশ শতকে এই গানের প্রসার হয়েছে। লাখনৌ এবং বেনারস থেকে ঠুমরীর সবচেয়ে বিখ্যাত দুটি ধারার প্রসার হয়েছিল। পরে পাঞ্জাবেও একটি ধারা তৈরি হয়েছিল।

শ্রোতা বা বোদ্ধা উভয়কেই আনন্দ দেয় ঠুমরি। ঠুমরী (কেউ কেউ ঠুংরি বলেন) হিন্দুস্তানি উপশাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয় ধারা। ঠুমরি হলো চঞ্চল স্বভাবের ভাবপ্রধান গান। এ গানে প্রেম, বিরহ, বিবাদ, অপেক্ষা, অভিমান, অভিযোগ, মিলনের অভিব্যক্তিগুলো সুর ও বাণীর সংমিশ্রণে ফুটিয়ে তোলা হয়। এজন্য শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের চেয়ে ঠুমরি অনেক বেশি বাণীপ্রধান। প্রতিটি শব্দ স্পষ্ট করে উচ্চারণ করা হয় এবং প্রতিটি শব্দের আবেগকে সময় নিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়। ঠুমরি ব্রজ, হিন্দি, উর্দু, পাঞ্জাবি ভাষায় রচিত হয়েছে। এছাড়া বাংলাসহ অন্যান্য কিছু ভাষায়ও কিছু রচনা আছে। বেনারস, পাঞ্জাবসহ হাতেগোনা কয়েকটি গায়ন রীতিতে গাওয়া হয় ঠুমরি।

সচরাচর সহজ তাল ও হালকা রাগে বাঁধা হয় ঠুমরি। রাগের শুদ্ধতার চেয়ে বেশি নজর দেয়া হয় বোলের বা অভিব্যক্তির প্রকাশের উপরে। ঠুমরির স্থায়ীর পাশাপাশি একাধিক অন্তরা থাকে।

পণ্ডিত চুন্নুলাল মিশ্র ঠুমরীর রং দেখাচ্ছেন (ইউটিউব লিংক)।

খটকা, মুড়কি, গিটকিরি এবং পুকার ঠুমরি গানের প্রধান অঙ্গ। খটকা মানে ঝুঁকে ঝুকে বোল বলা হয়, গিটকিরি তানের মতো বোল হয় সুরের কম্পনের সাথে, কয়েকটি সুরের উপরে শান্ত চালে বোল বসিয়ে তৈরি মুড়কি। পুকার এর মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে আসে কাতরতা। গানের বাণীর সাথে এগুলো মিশিয়ে সুন্দর বোল তৈরি করে উপস্থাপন করা হয়। এজন্য একই লাইনের কাব্য বহু অভিব্যক্তিতে প্রকাশ প্রায়।

ঘরানা হিসেবে, বানারস, লাখনও ও পান্জাবের ঠুমরি সবচেয়ে জনপ্রিয়।

 

সিরিজের বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল সূচি: