বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের জাকাত

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের জাকাত ফান্ড হ্যান্ডল বিষয়টা আমার পছন্দ না।
তবে তারা যেহেতু করছে, তাই বলবো – জাকাত ফান্ড হ্যান্ডল করার জন্য তাদের আরও ভালো প্রস্তুতি দরকার।

প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জাকাত দেবার সাইকিটা বোঝা জরুরী।
অনেকেই আছেন যারা আশপাশের মানুষের সাথে এত বেশি যুক্ত, তাদের জাকাত দেবার লোক বা খাত আলাদা করে খোঁজার দরকার হয় না।
কেউ কেউ আছেন লোক দেখানোর জন্য হইচই করে দেন। তাদেরও জাকাত দেবার প্রতিষ্ঠান লাগে না।

প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জাকাত দেন তারা, যারা শরিয়া অনুযায়ী জাকাত দিতে চান, কিন্তু সঠিক সুবিধাভোগী বা খাত খোঁজার জন্য সময় দিতে চান না।
এধরনের লোকের একটা বড় অংশ, টাকাটা সঠিক কাজে ব্যবহারে পাশাপাশি, সোয়াবের মালটিপ্লিকেশন চান। এজন্য তারা ইসলামিক বা আখিরাত নির্ভর খাত বেশি পছন্দ করেন। আবার বড় ইসলামিক নাম হলে, তার সাথে যুক্ত হয়ে যাবার এক ধরনের তৃপ্তি পান। অবচেতন মনে আখিরাতের একটা সাপোর্ট হিসেবে অনুভব করেন। এধরণের জাকাত দাতাদের কনফিডেন্স অর্জনে আমার দৃষ্টিতে বিদ্যানন্দ অনেক পিছিয়ে।

 

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের জাকাত

 

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের জাকাত

 

জাকাত নেবার বাজার টা খুব প্রতিযোগিতাপূর্ণ। সেখানে দীর্ঘ সময়ের অভিজ্ঞ প্রতিযোগীরা রয়েছেন। এক ধরণের প্রতিষ্ঠিত পার্সেপশন এবং ব্রান্ডিং স্টাইলও রয়েছে। প্রতি বছর নতুন প্রতিযোগী যুক্ত হচ্ছেন। তারা গতানুগতিকের পাশাপাশি নিত্য নতুন চলমান ইসলামিক ট্রেন্ডের উপর ভিত্তি করে ব্রান্ডিং করে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে আগাচ্ছেন।

সেই বাজারে শুধুমাত্র শরিয়া বোর্ড গঠন যথেষ্ট নয়। সেখানে ইসলামিক হুলিয়া ( বেশিরভাগ লোকে যেটা ইসলামিক বলে মনে করে) সম্পন্ন ব্যক্তিত্বের ব্রান্ডিং করা জরুরী। হুলিয়ার পাশাপাশি আরবি ভাষা, ক্যালিগ্রাফি ও সফট মিউজিক (যেগুলো ইসলামিক কন্টেন্ট এ ব্যবহার হয়) যথোপযুক্ত ব্যবহার দরকার। সেখানে জাকাতের ফজিলত বিষয়ক কন্টেন্ট দরকার। হুলিয়া-ধারী ব্যক্তিদের মুখ দিয়ে বিদ্যানন্দের মাধ্যমে জাকাতের ফজিলত বর্ণনা করা কন্টেন্ট দরকার। এই সব মিলিয়ে নিয়মিত একটা ব্র‍্যান্ডিং করে একটা পার্সেপশন তৈরি করা দরকার। সেই জায়গা তৈরি না করলে, প্রতিষ্ঠিত প্রতিযোগীরা প্রতিযোগী হিসেবে বৈধতা দেবে না। টার্গেট গ্রুপও খুব আত্মবিশ্বাস পাবে না।

আমি বুঝতে পারছি আমার পাঠক বিরক্ত হচ্ছেন।
তবে আপনার ভালো না লাগলে কিছু করার নাই। প্রতিটি বাজারের কিছু ভাষা আছে, ট্রেন্ড আছে। সেই বাজারে থাকতে চাইলে আপনাকে তা মানতে হবে। না পারলে ওই বাজারটা ছেড়ে দিতে হবে।
বাস্তবতা হচ্ছে – জাকাতের বাজারে থাকতে হলে বিদ্যানন্দকে একটি ইসলামিক ব্রান্ড হতে হবে, অথবা আলাদা একটি ইসলামিক ব্যান্ড তৈরি করতে হবে।
আরেকটি বিষয়।

জনগণ একাউন্টস-অডিট নিজে বুঝতে চাইবে না। তারা যেমন কুরআন-হাদিস বোঝার জন্য অন্যের উপর নির্ভরশীল। তেমনই অডিটের ভুল বের করে দেবার জন্যও অন্যের উপরে নির্ভরশীল।
কেউ পড়বে না, পক্ষে-বিপক্ষে কারা কি লিখল আর বলল, সেই ভিডিও খুঁজে বেড়াবে।
তাই এই বিষয়ে বোঝাবার চেষ্টার ফলাফলের বিষয়ে আমি সন্দিহান।