শুভ জন্মদিন শেখ রাসেল

শুভ জন্মদিন শেখ রাসেল ! ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বর্তমান বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সর্বকনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জন্ম।

১৫ আগস্টের কালো রাতে খুনিদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি ছোট রাসেল। তাঁকে হত্যার আগে ঘাতকরা একে একে পরিবারের অন্য সদস্য বড় ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল, দুই ভাবি সুলতানা কামাল – রোজী জামাল, মা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব এবং বাবা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে।

পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিহত হতে দেখে রাসেল দৌড়ে নিচে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করানো বাড়ির কাজের লোকজনের কাছে আশ্রয় নেয়। রাসেলের দীর্ঘকাল দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা আবদুর রহমান রমা তখন রাসেলের হাত ধরে রেখেছিলেন।

একটু পরেই একজন সৈন্য রাসেলকে বাড়ির বাইরে পাঠানোর কথা বলে রমার কাছ থেকে তাকে নিয়ে নেয়।

 

শুভ জন্মদিন শেখ রাসেল

 

আতঙ্কিত হয়ে শিশু রাসেল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেছিলেন, “আমি মায়ের কাছে যাব”। পরবর্তীতে মায়ের লাশ দেখার পর অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে মিনতি করেছিলেন “আমার হাসু আপা (শেখ হাসিনা) দুলাভাইয়ের (ড. এম. এ ওয়াজেদ মিয়া) সঙ্গে জার্মানিতে আছেন। … আপনারা আমাকে জার্মানিতে তাদের কাছে পাঠিয়ে দিন…।”

রাসেলের এই মর্মস্পর্শী আর্তিতে একজন সৈন্যের মন গলায় সে তাকে বাড়ির গেটে সেন্ট্রিবক্সে লুকিয়ে রাখে। কিন্তু এর প্রায় আধ ঘণ্টা পর একজন মেজর সেখানে রাসেলকে দেখতে পেয়ে তাকে দোতলায় নিয়ে ঠান্ডা মাথায় রিভলভারের গুলিতে হত্যা করে।

পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে সব ছোট রাসেল এমন সময়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন যখন তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। এক পা দু পা করে কেবল পৃথিবীকে দেখা শুরু করেছে।

বেঁচে থাকলে আজ তাঁর বয়স হত ৫১ বছর। বঙ্গবন্ধুর সর্বকনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জন্মদিনে রইলো তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং বুকভরা ভালোবাসা।

শুভ জন্মদিন শেখ রাসেল [ Happy Birthday Sheikh Russel ]

 

আজ শেখ রাসেলের জন্মদিন :

পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ ছেলেটির বাবা ছিলেন খুব পড়ুয়া স্বভাবের । জেলে বসেও প্রচুর পড়াশোনা করতেন তিনি । দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেল ছিল তাঁর খুব প্রিয় একজন লেখক । উনি মাঝে মাঝে ছেলেটির মাকে ব্যাখ্যা করে শোনাতেন বার্ট্রান্ড রাসেলের দার্শনিকতা। এসব শুনে শুনে বার্ট্রান্ড রাসেলের ভক্ত হয়ে ওঠেন মা এবং নিজের ছোট সন্তানের নাম রেখে দেন রাসেল; শেখ রাসেল ।

 

শুভ জন্মদিন শেখ রাসেল

 

বাবা তাঁর দেশের কাজে ভীষণ ব্যস্ত, মিটিং, মিছিল, কখনো আবার বদ্ধ জেলখানা। তাই বাবাকেও কাছে পেতো না তেমন একটা।
বাবা জেলে থাকায় বাড়িটা হয়ে যেতো একদম নীরব, বাবার ভরাট কণ্ঠের ডাক নেই, মানুষের আনাগোনা কম, তাই ছোট্ট রাসেলেরও থাকতো মন খারাপ। মা রাসেলের মন ভালো রাখার জন্য বুদ্ধি করে কিনে দেন একটা তিন চাকার সাইকেল।

ছোট মানুষ, দুই চাকার সাইকেল চালানোর বয়স তো তখনো হয়নি তার। মায়ের কিনে দেওয়া সাইকেলটা নিয়ে সারাদিন খেলায় মেতে থাকতো রাসেল। বাড়ির উঠোনের এ কোণ থেকে ও কোণে সাইকেল চালিয়ে বেড়াতো সে।

রাসেল কেমন বুদ্ধিমান ছিল জানো? তাদের বাসায় একটা ছোটখাটো লাইব্রেরি ছিলো। লাইব্রেরির বই থেকে বোনেরা তাকে গল্প পড়ে শোনাতো। একই গল্প ক’দিন পর আবার শোনানোর সময় দু-এক লাইন বাদ পড়লে সে ঠিকই ধরে ফেলতো। বলতো, সেই লাইনটা পড়োনি কেন?

রাসেল ছিল বাবার মতোই সাহসী এবং তুখোড় বুদ্ধিমান। এমন একটা চঞ্চল, নিষ্পাপ ছেলেকেও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালোরাতে বিশ্বাসঘাতকের দল মেরে ফেললো।

আজ রাসেলের জন্মদিন। শেখ রাসেল তার সোনালি শৈশব পেরুতে পারেনি আজও । অথচ আজ যার ৫৩ বছরের পুরাদস্তুর পুরুষ হবার কথা, সে কি অদ্ভুত ভাবে নিজেকে আটকে রেখেছে বছর দশেকের প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর এক কিশোরের মাঝে !

কোন ভাবেই কি রাসেলের খুনিদের ক্ষমা করা যায়?

কিন্তু শুধু আইন করে ক্ষমা করাই হয়নি, রাষ্ট্রীয় ভাবে তাদেরকে কাউকে কূটনীতিক, কাউকে জনপ্রতিনিধি বানিয়ে পুরস্কার দেয়া হয়েছে। সেই ঘৃণ্য কাজটি যে করেছিল, যারা করেছিল, আজও বাংলাদেশের কিছু মানুষ তাদেরকে সমর্থন করে, তাদের রাজনীতিকে সমর্থন করে। সেই মুখে আবার ন্যায়বিচারের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে।
আফসোস।

 

আজ শেখ রাসেলের জন্মদিন

 

আজ শেখ রাসেলের জন্মদিন।
এই জন্মদিনের তার সৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই : শুভ জন্মদিন শেখ রাসেল [ Happy Birthday Sheikh Russel ]

তার সম্পর্কে আরও জানুন:

Leave a Comment