আমরা শত্রু-মিত্র চিনতে আজীবন ভুল করি।
আমাদের প্রধান শত্রুরা আজও ঠিক করে দেয় – কে আমাদের প্রধান শত্রু, নেতা, মিত্র।
আমরা আজও হরলিক্স এমনি এমনিই খাই।
আপনাদের নিশ্চয় মানে পড়ে না – ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিমদের ধর্মানুভূতিতে সবচেয়ে বড় আঘাত করেছিল – আবু আলা মওদুদি।
ইমপ্যাক্ট বিবেচনায় – তার এবং তার ফলোয়াদের ধারে কাছেও আজ পর্যন্ত কেউ পৌছাতে পারেনি।
ইসলামিক বুদ্ধিজীবী মৌলানা হিসেবে সে বিখ্যাত ছিল। তার পাঠক ছিল কোটি কোটি। এবং সবাই ধর্মবিশ্বাস নিয়েই তার লেখা পড়তো।
সেই ধর্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে, সে মুসলিমদের প্রতারিত করে।
আঘাত করে ইসলামের মুল নীতিতে।
সে কোরআনকে অসম্পন্ন বলেছিল। নিজের লেখনীর মাধ্যমে অসম্পূর্ণ কোরানের মেসেজকে, পূর্ণ করে দেবার ধৃষ্টতা দেখিয়েছিল।
বলেছিল মহানবীর চরিত্র ত্রুটিযুক্ত (ভুল-ভ্রান্তি ও পাপ ছিল)। সকল নবী, রসুল, সাহাবা দের যাচ্ছেতাই সমালোচনা করেছিল।
অসাম্প্রদায়িক ইসলাম ধর্মকে – রাতারাতি কোরআন-হাদিসের ভ্রান্ত ব্যাখ্যার মাধ্যমে – সাম্প্রদায়িক অশান্তির ধর্মে পরিণত করেছিল।
প্রকৃত ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা যখন বুঝতে পারে, তখন তারা তাকে অস্বীকার করে।
তাকে শুধুমাত্র নাস্তিক বা মুরতাদ বললে ভুল হবে। সে ছিল সরাসরি ইসলামের শত্রু। ইসলামকে ইন্টেলেকচুয়ালই নষ্ট করতে চেয়েছিল সে।
ইসলামের নাম ধরে – কৌশলে জমায়াতে ইসলাম নামের একদিন ধর্মে ধর্মান্তরিত করার ষড়যন্ত্র করেছিল সে।
তাই মুসলিমরা তাকে মুসলিমদের চিরকালের শত্রু -ইহুদি- খেতাব দেয়।
শ্লোগান তোলে – মওদুদি ইহুদি। সেই শ্লোগান গ্রাম গঞ্জেও পৌঁছেছিল।
কিন্তু – জেহাদি জোশে কেই তাকে হত্যা করেনি। ওই অপরাধে মওদুদিকে রাষ্ট্র আটও করেনি।
আজ সেই মওদুদির বা তল্পিবাহক, বার্তাবাহক, নীতি-বাহকরা – আর ইসলামের প্রধান শত্রু না।
বরং তাদের – ছায়া-র তলে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশের ইসলামি আন্দোলন।
আজ মওদুদি বাদীরাই ইসলামি আন্দোলনের – নীতিনির্ধারক, ধারক, বাহক।
তাদের ধর্মনুভূতিতে আঘাত পাবার বিশেষ অঙ্গটি, স্বরনকালের সবচেয়ে বড় আকার ধারণ করেছে।
সেই সেনার অঙ্গ স্বাধীনতার চেতনার পক্ষের মানুষদের দেখলেই – দ্রুত উত্থিত হয় এবং আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
সেই আঘাত লাগে আমাদের দেশের সব মুসলিম দের কলিজায়।
আমরা ঝাঁপিয়ে পড়ি – তাদের দেখানো ইসলামের শত্রুদের উপর।
আজ মওদুদি ও তার ধর্ম-বাহকেরা আমাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ – মিত্র, নেতা, আদর্শ।
তারাই আমাদের ইসলাম রক্ষার কর্তা।
তারা আমাদের পরিমাণ মত ইসলাম দেয়। প্রয়োজনে – কাফের, নাস্তিক, মুরতাদ, মুনাফেক উপাধি দেয়।
বরং আজ আমাদের ইসলামের প্রধান শত্রু কয়েকটি কনফিউজড বাচ্চা ব্লগার।
যাদের না হয়েছে বয়স, না আছে রিএ্যক্ট করার মত পাঠক সংখ্যা।
যারা নিজেদের একটু মুক্ত মনা বলে আধুনিক ভাবে। নিজেদের ধর্ম বিশ্বাসের কনফিউশন নিয়ে -ব্লগ নামের ব্যক্তিগত ডায়েরি লেখে। তাদের একই মানসিকতার মাত্র কয়েক শত লোক সেটা পড়ে। সেগুলো নিয়ে কারও ধর্ম বিশ্বাসে সামান্য পরিবর্তন হয় না।
ইসলাম বিশ্বাসের উপর ইমপ্যাক্টের দিক দিয়ে – এই ব্লগার গুলো – মৌদুদির ফেলে দেয়া গুপ্ত কেশের সমানও না।
অথচ আজ এরাই আমাদের বিচারে ইসলামের প্রধান শত্রু !!!
হায়রে বাঙ্গালী মুসলমান 🙁
আজও আমরা চিহ্নিত শত্রুকে সাথে নিয়ে, খুঁজে ফিরি কল্পিত শত্রুকে।
শত্রু মনে করে নিজের বাবা-চাচা-বন্ধুর বুকে বসিয়ে দেই চুরি।
