শরৎ ঋতুসংগীত আজকের আলোচনার বিষয়। ভাদ্র ও আশ্বিন মাস মিলে শরৎ বাংলার ষড়ঋতুর তৃতীয় ঋতু। শরৎকে ইংরেজিতে “অটাম” বলা হলেও উত্তর আমেরিকায় একে “ফল” হিসেবে ডাকা হয়। পৃথিবীর ৪টি প্রধান ঋতুর একটি হচ্ছে শরৎকাল। উত্তর গোলার্ধে সেপ্টেম্বর মাসে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে মার্চ মাসে শরৎকাল গ্রীষ্মকাল ও শীতকালের মধ্যবর্তী ঋতু হিসেবে আগমন করে। এসময় রাত তাড়াতাড়ি আসে এবং আবহাওয়া ঠাণ্ডা হতে থাকে। এই সময়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পত্রঝরা বৃক্ষের পাতার ঝরে যাওয়া।

বর্ষার অবসানে রূপময় বাংলার ঋতু পরিক্রমায় স্নিগ্ধতা- কোমলতা নিয়ে আবির্ভূত হয় শরৎকাল। বঙ্গাব্দ বর্ষপঞ্জি অনুসারে আজ ১লা ভাদ্র। ভাদ্র-আশ্বিন এ দুই মাস বাংলাদেশে শরৎকাল। এ ঋতুর রয়েছে অনন্য কিছু বৈশিষ্ট্য। এ সময় মেঘমুক্ত আকাশে শিমুল তুলোর মতো ভেসে চলে সাদা মেঘের খেয়া। চারদিক আমন ধানের সবুজ চারার ওপর ঢেউ খেলে যায় উদাসী হাওয়া।
আদিগন্ত সবুজের সমারোহ। এ সময় ফোটে গগন শিরীষ, ছাতিম, বকফুল, মিনজিরি, শেফালি, শিউলি, কলিয়েন্ড্রা, কাশফুল ইত্যাদি। দূর্বা ঘাস ভিজে যায় হালকা শিশিরে। বিলের জলে নক্ষত্রের মতো ফুটে থাকে সাদা ও লাল শাপলা। এ সময় ফল হিসাবে পাওয়া যায় আমলকী, জলপাই, জগডুমুর, তাল, অরবরই, করমচা, চালতা, ডেউয়া ইত্যাদি।
শরতের ভাব রূপ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথম এই গানটি লেখেন-
” আজি শরত তপনে প্রভাতে
স্বপনে কী জানি পরান কী যে চায়। ‘(প্রকৃতি ১৪১)
এই গানটি ” বিভাগ ” রাগে বাঁধা, বাউল অঙ্গের। এতে শরতের বহিরঙ্গ ও অন্তরঙ্গ দুটো রুপেরই বাণীময় প্রকাশ ঘটে।
শরৎ ঋতুর উপহার কাশফুল। এই ঋতুতে ধবল পালকের মতো কোমল সাদা কাশফুল মনকে শুভ্রতায় ভরে তোলে। রুপালি কাশফুল সোনালী ধানের গুচ্ছ আর সাথে সুরভিত শিউলি ফুল বঙ্গভূমিকে করেছে সমৃদ্ধ।
আরও দেখুন:
