হেফাজতে ইসলামের মুজাহিদদের ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপত্তা : Personal privacy, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, ব্যক্তিগত সুরক্ষার মানবাধিকার ????
আল্লামা মামুনুল হকের এসব হরণ হয়েছে বলে যারা খুব চিন্তিত, দুঃখী, মরমে মরে যাচ্ছেন, তারা চলুন একটু সত্যের মুখোমুখি হই।
আমি সচেতন ভাবে বলছি – আল্লামা মামুনুল হক নিজে, তার ব্যক্তিগত জীবনে নাক গলাতে, আমাদের আমন্ত্রণ করেছেন। আমাদের মানে বাংলাদেশের সকল মুসলিম কে। এমনকি বিশ্বের সকল মুসলিমকেও। শুধু আমন্ত্রণ করেন নি, বাধ্য করেছেন।
কিভাবে?
আল্লামা মামুনুল হকরা যে আন্দোলন করছেন, তার চূড়ান্ত পরিসমাপ্তি “ইসলামিক রাষ্ট্র”, “খেলাফত”, “শরিয়া আইন” এর প্রতিষ্ঠা।
সেই আইন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তারা চায়- আপনার-আমার ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতিটি বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে এবং তাদের নির্ধারিত শরিয়া অনুযায়ী ঠিক করে দিতে।
আপনি কি খাবেন বা পান করবেন, কি বলবেন, কি পড়বেন, কোথায় শোবেন, কার সাথে গমন করবেন – ইত্যাদি, ইত্যাদি, ইত্যাদি। এমনকি আপনি কি চিন্তা করবেন সেটাও। সব কিছু তারা – দেখে, শুনে, পড়ে, টিপে, শুকে, চেটে – তাদের শরিয়া নিক্তিতে মেপে, আপনার জন্য হারাম বা হালাল করবেন।
[ হেফাজতে ইসলামের মুজাহিদদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার অধিকার কী?]
প্রসঙ্গত বলি, তাদের মোরাল পুলিশ যদি আপনার স্ত্রীকে চিনতে না পারে, যদি মনে করে আপনি হারাম বিবি বা অন্য কাউকে নিয়ে কোথাও গমন করছেন। তখন তারা লোক নিয়ে আপনার রুমের মধ্যে ঢুকে দেখতে পারবে। আপনি রুমের মধ্যে কি করছেন, সেটার বিস্তারিত, তাদের শরিয়া নাফিজ করার স্বার্থেই দেখতে হবে। কারণ শরিয়া অনুযায়ী “জেনা” প্রমাণ করতে হলে, অন্তত ৪ জন পুরুষকে, আপনার “অঙ্গ প্রবেশ” করা অবস্থায়, স্বচক্ষে দেখতে হবে। ঘরে না ঢুকে সেটা দেখবে কিভাবে?
দেখুন- আল্লামা মামুনুল হক হেফাজতে ইসলামের “শো-বয়” বা “পোস্টার বয়”। সে হিসেবে হেফাজতের কল্পিত ইসলামিক রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ “আমির-উল-মোমেনিন”। তিনিই হবেন সেই শরিয়ার আদর্শের অন্যতম উদাহরণ। তাকে দেখেই তো আমরা শিখবো শরিয়া রাষ্ট্রের খলিফা এবং নাগরিক কেমন হবে। আর সেটা বোঝার জন্য, তাকে সর্বক্ষেত্রে ছায়ার মতো অনুসরণ করার কি কোন বিকল্প আছে? সেই হিসেবে ওনার উপরে কোন অন্যায় হয়নি। বরং যতটুকু Privacy Invaded হয়েছে, সেটা কম !!!
তাই যেসব বুদ্ধিজীবী, গণতান্ত্রিক মানবাধিকারের নিক্তিতে, আল্লামা মামুনুল হকের “হক বা অধিকার” কে মাপছেন, তারা মাপটা সঠিক জানেন না। তুলনা “এপেল-টু-এপেল” হচ্ছে না। শরিয়া হুকুমতের “privacy rights” আর গণতন্ত্রের “privacy rights” এক নয়। এজন্যই আপনারা জেনে রাখুন যেই “privacy rights” সে deserve করে, সেই অনুযায়ীই তার সাথে আচরণ করা হয়েছে। এতে আপনার মানবাধীকারবার নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার কিছু নাই।
সেই সাথে একজন মুসলিম হিসেবে,
আমি দেশের সকল ফেলো মুসলিম ভাইবোনদের অনুরোধ করবো। আল্লামা মামুনুল হুজুরের মতো যারা শরিয়া আইন চায়, আপনারা সর্বক্ষণ তাদের ফলো করুন, সর্বক্ষেত্রে ফলো করুন। শরিয়া বহির্ভূত কিছু করলে জনসমক্ষে নিয়ে আসুন। যদি আমরা বুঝি তারা ভিতরে ও বাইরে একই রকম, তাহলে তাদের বিষয়ে আমরা পরবর্তিতে ভাববো। কি বলেন?
আর যদি কেউ মুখে শরিয়া আইনের কথা বলে “মামুনুল হক মডেল” ফলো করে, তবে তাদের কি করতে হবে, আপনারা সেটা নিশ্চয় জানেন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে হেফাজত করুন।
আরও পড়ুন: