আইভি রহমানের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি

২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ভয়ঙ্কর গ্রেনেড হামলায় মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আইভি রহমান গুরুতর আহত হন। দীর্ঘ ৫৭ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে জীবনযুদ্ধে হেরে যান সংগ্রামী এই নেত্রী।

 

SufiFaruq.com Logo 252x68 2 আইভি রহমানের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি

আইভি রহমানের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি

 

ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ জালাল উদ্দিন আহমদ আর হাসিনা বানুর পঞ্চম সন্তান জেবুন্নাহার আইভির জন্ম ১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর। কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানায়।। ১৯৫৮ সালের ২৭ জুন নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই বিয়ে হয়ে যায় ভাষা আন্দোলনের তুখোড় নেতা ও প্রয়াত প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমানের সঙ্গে। বিয়ের পর তার নাম হয় আইভি রহমান। স্বামীর উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় ভৈরবে স্কুল ও কলেজ জীবন শেষ করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। অনার্স করেন বাংলায়। শুধু রাজনীতির জন্য নয়, আইভি রহমান বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সঙ্গে পারিবারিকভাবেও জড়িত ছিলেন। তার বড় বোন শামসুন্নাহার সিদ্দিক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানার শাশুড়ি। তাঁর একমাত্র ছেলে বিসিবি সভাপতি ও সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন, দুই মেয়ে তানিয়া ও তনিমা।

ছাত্ররাজনীতির মধ্য দিয়ে তাঁর অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বর্ণাঢ্য জীবন শুরু। বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনে।

 

SufiFaruq.com Logo 252x68 3 আইভি রহমানের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি

 

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বেগম সাজেদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তিনি রাইফেল ও ফাস্ট-এইড ট্রেনিং নেন। অন্যান্য মহিলা কর্মীদের সংগঠিত করে ট্রেনিং দেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম বদরুন্নেছা ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে স্থাপিত ক্যাম্পগুলোতে খাবার, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহ করতেন। মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহ ও মনোবল বৃদ্ধির জন্য স্বাধীন বাংলা বেতার থেকে প্রায়ই কথিকা পড়তেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হৃদয়বিদারক ঘটনার পর থেকে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। দৃঢ়তার সঙ্গে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেন। আইভি রহমান ছিলেন মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক।

 

আইভি রহমানের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি

 

রাজনীতির সাথে সাথে তিনি নারী জাগরণে রেখে গেছেন বলিষ্ঠ ভূমিকা। তিনি ১৯৭২-১৯৭৬ পর্যন্ত বাংলাদেশ মহিলা সমিতি’র সাধারণ সম্পাদিকা এবং ১৯৭৬-২০০৩ পর্যন্ত সহ সভানেত্রী এবং ২০০৪ সালে সভানেত্রী’র দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আগস্ট ১৯৯৬ থেকে সেপ্টেম্বর ২০০১ পর্যন্ত জাতীয় মহিলা সংস্থার সভানেত্রী’র দায়িত্ব পালন করেন। নারী ও শিশু নির্যাতনবিরোধী আইন প্রণয়নে তিনি অনবদ্য অবদান রাখেন। তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে এসেছিলেন রাজনীতিতে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অবিচল ছিলেন জাতির জনকের আদর্শের প্রতি।

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment