কুমারখালী উপজেলা : ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সুফি ফারুকের প্রেরণা

প্রতিটি মানুষের কাছেই নিজের জন্মভূমি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তেমনি তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, উদ্যোক্তা ও সামাজিক কর্মী সুফি ফারুক ইবনে আবুবকর–এর কাছে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলা এক ভিন্ন আবেগ ও প্রেরণার জায়গা।
কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রামেই তার বাড়ি ও জন্মস্থান।

কুমারখালী শুধু একটি উপজেলা নয়—এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ইতিহাসে এক মহৎ অধ্যায়। এখানে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আধ্যাত্মিক সাধক লালন সাঁই, সাংবাদিক ও সমাজ সংস্কারক কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার, মুসলিম ঔপন্যাসিক মীর মশাররফ হোসেন এবং বিপ্লবী বাঘা যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়–এর অমর স্মৃতি বিজড়িত। এসব মহামানবের জীবন ও কর্ম থেকেই সুফি ফারুক প্রেরণা পান, যা তার চিন্তা ও কর্মকাণ্ডে প্রতিফলিত হয়।

 

কুমারখালী উপজেলা

 

Table of Contents

কুমারখালী উপজেলা পরিচিতি ও ঐতিহ্য :

কুষ্টিয়া জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এলাকা কুমারখালী উপজেলা।

  • আয়তন : ২৬৫.৮৯ বর্গকিলোমিটার (১০২.৬৬ বর্গমাইল)

  • অবস্থান :

    • পূর্বে খোকসা উপজেলা

    • পশ্চিমে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা

    • উত্তরে পাবনা সদর উপজেলা

    • দক্ষিণে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলা

  • গড়াই নদীর কোল ঘেঁষে এর অবস্থান, যা একে ভৌগোলিকভাবে বিশেষ বৈশিষ্ট্য দিয়েছে।

  • ঐতিহ্য:

    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার জীবনের এক উল্লেখযোগ্য সময় কুমারখালীর শিলাইদহে কাটিয়েছেন। এখানেই তিনি গীতাঞ্জলি–র অনেক কবিতা রচনা করেন, যার জন্য ১৯১৩ সালে তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

    • এ উপজেলাতেই রয়েছে উপমহাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী সাধক লালন সাঁইয়ের সমাধি সৌধ

    • এখানেই জন্মেছিলেন বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলিম ঔপন্যাসিক মীর মশাররফ হোসেন, যিনি বিষাদ সিন্ধু রচনা করে অমর হয়ে আছেন।

    • সমাজ সংস্কারক কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার এখান থেকেই তার সাংবাদিকতা ও সংস্কার আন্দোলনের সূচনা করেন।

    • বিপ্লবী বাঘা যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়–এর সংগ্রামী স্মৃতিও কুমারখালীর মাটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে।

সুফি ফারুক ইবনে আবুবকর তার জন্মভূমি কুমারখালীকে কেন্দ্র করে একাধিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
তার লক্ষ্য—কুমারখালী-খোকসার তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষিত, দক্ষ, কর্মঠ, রুচিশীল ও মানবিক হিসেবে গড়ে তোলা। এজন্য তিনি পেশা পরামর্শ সভা, দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ, নারী ক্ষমতায়ন প্রকল্প, সাংস্কৃতিক সংরক্ষণ ও আইসিটি বিষয়ক নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

কুমারখালী উপজেলা ইতিহাস, সাহিত্য ও সংস্কৃতির এক সমৃদ্ধ ভাণ্ডার।
এ উপজেলার ঐতিহ্যকে ধারণ করে এবং নতুন প্রজন্মকে প্রস্তুত করে সুফি ফারুক ইবনে আবুবকর ভবিষ্যতের একটি উন্নত ও আলোকিত সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন।

📌 কুমারখালীর ইউনিয়ন, গ্রাম ও প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্য এবং প্রতিটি এলাকায় সুফি ফারুকের কার্যক্রম ধাপে ধাপে সংযুক্ত করা হবে।

 

কুমারখালী উপজেলার ইউনিয়ন তালিকা :

কুমারখালী উপজেলা মোট ইউনিয়ন ১১ টি। ইউনিয়নের বিস্তারিত ও গ্রামের তালিকা দেখতে লিংক এ ভিজিট করুন।

–  ১ নং কয়া ইউনিয়ন
–   ২ নং শিলাইদহ ইউনিয়ন
–   ৩ নং জগন্নাথপুর ইউনিয়ন
–   ৪ নং সদকী ইউনিয়ন
–   ৫ নং নন্দলালপুর ইউনিয়ন
–   ৬ নং চাপড়া ইউনিয়ন
–   ৭ নং বাগুলাট ইউনিয়ন
–   ৮ নং যদুবয়রা ইউনিয়ন
–   ৯ নং চাঁদপুর ইউনিয়ন
–   ১০ নং পান্টি ইউনিয়ন
–   ১১ নং চরসাদীপুর ইউনিয়ন

 

 

কুমারখালী উপজেলার ইউনিয়ন ম্যাপ
কুমারখালী উপজেলার ইউনিয়ন ম্যাপ

 

কুমারখালী উপজেলার ইতিহাস:

নামকরণ ও প্রাচীন উল্লেখ:

কুমারখালী নামটি প্রাচীনকাল থেকেই পরিচিত। ব্রিটিশ জরিপকার রেনেলের মানচিত্রে কুমারখালীর নাম পাওয়া যায়। আবার ১৮২০ সালের ৩০ জুলাই ঢাকায় সফর শেষে ফেরার পথে বিশপ হেবার কুমারখালীতে রাতযাপন করেন। তাঁর ডায়েরিতে তিনি লিখেছিলেন, কুমারখালীতে তিনি গোয়ালা, মৎস্যজীবী ও চাষীদের মতো সরল ও আদিম প্রকৃতির মানুষ দেখতে পেয়েছিলেন।

কুমারখালীর নামকরণ নিয়ে নানা মতভেদ রয়েছে—

  • কারও মতে, কমর শাহ নামের এক ব্যক্তির নাম থেকেই এ নামের উৎপত্তি।

  • আবার কেউ কেউ বলেন, নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁর কালেক্টর কোমরকুলি খাঁর নাম থেকে “কুমারখালী” নামটির সূত্রপাত।

  • অপর এক ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়, দশম শতকে গড়াই নদীর নাম ছিল “কুমার নদী”।

যেহেতু নামটি অত্যন্ত প্রাচীন, তাই এর ব্যাখ্যা নিয়ে ভিন্নমত থাকাই স্বাভাবিক।

প্রাচীন শাসন

বাংলার সুদূর অতীতে কুষ্টিয়া তথা কুমারখালীর ইতিহাস অনেকটাই দুর্লভ। ধারণা করা হয়—

  • তৃতীয় শতকের সমতট রাজ্যপঞ্চম শতকের গুপ্ত শাসনকালে এই অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত ছিল, যদিও এ নিয়ে কিছু মতভেদ রয়েছে।

  • সপ্তম শতকে শশাঙ্কের শাসনাধীন হওয়ার পর এটি পাল রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। দশম শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত পালদের অধীনেই ছিল কুষ্টিয়া-কুমারখালী।

  • পরবর্তীতে বিক্রমপুরের চন্দ্রবংশীয় রাজারা শাসন করেন, এবং রাজা সামন্তসেন বাংলায় সেন রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রায় দুই শতক সেনদের শাসন চলেছিল।

সেন রাজবংশের শেষ রাজা লক্ষ্মণ সেন প্রায় ত্রিশ বছর বাংলায় রাজত্ব করেন। তাঁর শাসনামলেই ১২০১ (বা মতান্তরে ১২০৩/১২০৪ খ্রিস্টাব্দে) তুর্কি সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজি নদীয়া জয় করেন। এর মাধ্যমে বাংলায় মুসলিম শাসনের সূত্রপাত হয়, এবং কুষ্টিয়া-কুমারখালীও মুসলিম শাসনের অধীন আসে।

মুসলিম শাসন থেকে ইংরেজ শাসন

ত্রয়োদশ শতাব্দী থেকে ১৭৬৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দেওয়ানি লাভ করা পর্যন্ত প্রায় ৫৬২ বছর এ অঞ্চল ছিল সুলতানি ও মুঘল শাসনের অধীনে। এ সময়ে শাসক ছিলেন সুবাদার, নবাব, নাজিম ও চাকলাদারগণ।

মুঘল শাসনামলে রাজস্ব আদায় ও প্রশাসনিক সুবিধার্থে পরগণা ব্যবস্থা চালু হয়। ১৮৫৫ সালের ভূমি জরিপ অনুযায়ী ১৩টি পরগণা নিয়ে ১৪২.৭০ বর্গমাইল আয়তনের কুমারখালী থানা গঠিত হয়।

পরগণাগুলো হলো:
ইবরাহিমপুর, মোহাম্মদশাহী, ভর ফতে ঝংপুর, কান্তনগর, জাহাঙ্গীরাবাদ, বামনকর্ণ নাজির, এনায়েতপুর, বেগমাবাদ, রোকনপুর, তারাউজিয়াল, জিয়া রোখি, ইসলামপুর ও খদকী।

মাছুম খাঁ ও স্বাধীন রাজ্য

রাজা গণেশ ইসলাম গ্রহণ করে জালাল উদ্দিন মহম্মদ শাহ নাম ধারণ করলে কুমারখালী অঞ্চল তার নিয়ন্ত্রণে আসে। এ সময় ক্ষুদ্র রাজাদের মধ্যে সংঘর্ষও দেখা দেয়। কুমারখালী রেলস্টেশনের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত রণক্ষেত্র “রণের মাঠ” ও “গড়ের মাঠ” আজও সেই সংঘর্ষের স্মৃতি বহন করছে।

এ অঞ্চলে সেনানায়ক মাছুম খাঁ, ফতেহাবাদ পরগণার রাজা মজলিশ কুতুবের সহযোগিতায় একটি স্বাধীন রাজ্য গড়ে তোলেন। বিখ্যাত যোদ্ধা ঈশা খাঁ তাঁকে সহায়তা করেছিলেন। তাঁর উদ্যোগেই কুমারখালীর দুর্গাপুরে একটি দূর্গ নির্মিত হয়।

কিন্তু মোগল সেনাপতি এহতেশাম নৌবহর নিয়ে এ রাজ্য আক্রমণ করেন। কয়েক দিন ধরে রণের মাঠ ও গড়ের মাঠে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে মাছুম খাঁর পুত্র মির্জা মুনিম খান নিহত হন। পরাজিত মাছুম খাঁ বিক্রমপুরের দিকে পলায়ন করেন।

রাজা সীতারাম ও তাঁর বিদ্রোহ

অন্যদিকে, রাজা সীতারাম মাগুরার মহম্মদপুরে রাজধানী স্থাপন করেছিলেন। কুমারখালীর কয়েকটি পরগণা তাঁর অধীনেই ছিল। তিনি কুমারখালীর খোরশেদপুরে একটি মঠ নির্মাণ করেছিলেন, যার ধ্বংসাবশেষ আজও তাঁর শাসনের সাক্ষ্য বহন করে।

সে সময় বাংলার সুবাদার ছিলেন নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁ। সীতারাম ছিলেন সাহসী ও স্বাধীনচেতা শাসক। তিনি বিদ্রোহ ঘোষণা করে রাজ্যের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং খাজনা দেওয়া বন্ধ করে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁ তাঁর বিরুদ্ধে সেনা প্রেরণ করেন।

এই যুদ্ধে নাটোরের রাজা রামজীবন রায় নবাবকে সাহায্য করেন—সৈন্য, অর্থ ও যুদ্ধহাতি পাঠান। ফলে রণের মাঠ ও গড়ের মাঠে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে সীতারামের বাহিনী পরাজিত হয়। সীতারাম বন্দি হয়ে নবাবের কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন।

যুদ্ধে বিজয় লাভের পর নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁ নাটোরের রাজা রামজীবন রায়কে খুশি হয়ে কুমারখালীর কয়েকটি পরগণা তাঁকে দান করেন।

 

ব্রিটিশ শাসনের সূচনা

১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের পর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলার ক্ষমতা চলে যায় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে। ১৭৬৫ সালে মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের কাছ থেকে বার্ষিক ২৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে কোম্পানি বাংলার দেওয়ানী অধিকার লাভ করে। এর ফলে কুষ্টিয়া-কুমারখালী কোম্পানি শাসনের অধীনে আসে।

১৭৮৭ সালে এফরেড ফার্নকে নদীয়া জেলার কালেক্টর এবং জিকেরীকে সহকারী কালেক্টর নিযুক্ত করা হয়। প্রশাসনিক সুবিধার্থে কোম্পানি বাংলায় জেলা, মহকুমা ও থানা গঠন করে।

ব্রিটিশ শাসনের প্রশাসনিক পরিবর্তন

১৮২৮ সালে পাবনা জেলা গঠিত হলে কুমারখালী পাবনা জেলার অন্তর্ভুক্ত হয়। এর আগে কুমারখালী যশোর জেলার অধীনে ছিল। পরে ১৮৫৭ সালে কুমারখালীকে মহকুমা করা হয় এবং এর অন্তর্ভুক্ত করা হয় বালিয়াকান্দি, পাংশা ও খোকসা থানা। ১৮৭১ সালে কুমারখালী মহকুমা বিলুপ্ত হলে পুনরায় থানায় রূপান্তরিত হয় এবং কুষ্টিয়া মহকুমাভুক্ত হয়ে নদীয়া জেলার অধীনে আসে।

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর নিয়ে নতুন জেলা গঠিত হয়, যার নাম প্রথমে রাখা হয়েছিল “নদীয়া”। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাসিম উদ্দিন আহাম্মদ এর দায়িত্বে ছিলেন। পরবর্তীতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মুর্তজা আলী একই বছরের অক্টোবরে জেলার নাম পরিবর্তন করে রাখেন কুষ্টিয়া

ব্রিটিশ শাসনে উপজেলা প্রশাসনের ধাপ
  • ১৯৫৭ সালে বুনিয়াদি গণতন্ত্রের আদেশে থানা কাউন্সিল গঠিত হয়।

  • ১৯৭২ সালে স্বাধীনতার পর এর নামকরণ হয় “থানা উন্নয়ন কমিটি”।

  • ১৯৭৬ সালে স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশে “থানা পরিষদ” নামে পরিচিত হয়।

  • ১৯৮২ সালে স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশের মাধ্যমে এটি উপজেলা পরিষদে উন্নীত হয়।

  • ১৯৯২ সালে সরকার উপজেলা প্রশাসন বাতিল করে, তবে পরে তা পুনঃপ্রবর্তিত হয়।

 

সিপাহী বিদ্রোহ, ফারায়েজী ও নীল বিদ্রোহ

ব্রিটিশ শাসনামলে দেশে শুরু হয় সিপাহী বিদ্রোহ, ফারায়েজী আন্দোলন ও নীল বিদ্রোহ—যার প্রভাব কুমারখালীতে ব্যাপকভাবে পড়ে।

১৮৫৭ সালে সারা ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে সিপাহী বিদ্রোহ। কুমারখালীও এ সময় অশান্ত হয়ে ওঠে। পাবনায় অনুষ্ঠিত মিটিংয়ে ঠিক হয়, বিদ্রোহীরা যাতে নদীপথে ঢাকায় প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য কুমারখালী নদীপথে পাহারা বসানো হবে। প্রথমবারের মতো কুমারখালীতে ইংরেজ নৌঘাঁটি স্থাপন করা হয়।

তবে নৌসেনারা মদ্যপ অবস্থায় একটি রসদবাহী জাহাজ **“ইন্দ্র”**তে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং দোষ চাপায় বিদ্রোহী সিপাহীদের ওপর। তদন্তে ম্যাজিস্ট্রেট সি. এফ. হ্যারভে ও বাঙালি ম্যাজিস্ট্রেট গুরুদাস চক্রবর্তী প্রমাণ করেন—আগুন বিদ্রোহীরা নয়, নৌসেনারাই লাগিয়েছিল (১৮৫৮)।

১৮৬১ সালে ইংরেজ ক্যাপ্টেন পার্সন সেনাসহ দুর্গাপুরে ঘাঁটি স্থাপন করে ফারায়েজী নেতা কাজী মিয়াজানকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালান। স্থানীয় বিশ্বাসঘাতকের সহায়তায় তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং মুসলমানদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়।

তখন কুমারখালী অঞ্চলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কমার্শিয়াল রেসিডেন্ট ছিলেন উইলিয়াম সাহেব। যদিও তার কাজ ছিল কোম্পানির ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষা করা, তিনি ব্যক্তিগত স্বার্থে এখানে নীলচাষ শুরু করেন। তাঁর কুঠি ছিল আজকের মথুরানাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনে, আর তিনি থাকতেন “শীতল কোঠা” নামক একটি ভবনে (বর্তমান রেললাইন সংলগ্ন এলাকায়)।

কুমারখালী বাজারের বিকাশ

উইলিয়াম সাহেব কুমারখালী শহরে মহর ভিত্তি স্থাপন করেন এবং এখানে দৈনিক বাজার চালু করেন। এতে পাবনার দোগাছি, সেনগ্রাম, যশোরের শৈলকুপা, মেঘনা-জসাই প্রভৃতি অঞ্চল থেকে নৌকা, পালকি ও ঘোড়ার গাড়িতে লোকজন আসতে শুরু করে। বাজারে দেশি-বিদেশি পণ্যের সমাহার ঘটে এবং কুমারখালী বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে বিকশিত হয়।

 

কোম্পানির ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়া

১৮৩৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় তাদের সরাসরি ব্যবসা গুটিয়ে নেয়। এরপর কুমারখালী বাজারের ভার অর্পিত হয় প্রিন্স দ্বারোকানাথ ঠাকুরের ওপর। তিনি ১৮৬০ সালের দিকে এই দায়িত্ব নেন। দ্বারোকানাথ ছিলেন ইংরেজ অনুগত ও আধুনিক মনোভাবাপন্ন জমিদার। লবণ মহল কিনে ও কোম্পানির বেনিয়ান হিসেবে তিনি বিপুল অর্থ উপার্জন করেন। তাঁর জমিদারিতে নীলচাষ চলত এবং নিজস্ব নীলকুঠিও ছিল একাধিক। কুমারখালী বাজার থেকে তিনি যে অর্থ উপার্জন করতেন, তার একটি অংশ ইংল্যান্ডে পাঠাতেন, বিশেষত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কল্যাণে ব্যবহারের জন্য।

উইলিয়াম সাহেব ও “জানোবিয়া” জাহাজ

কোম্পানির কুঠিয়াল উইলিয়াম সাহেব ইংল্যান্ডে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। কুমারখালীর গড়াই নদীর ঘাটেই নির্মিত হয় তাঁর বিশাল জাহাজ “জানোবিয়া”। সব মালপত্র তোলা হলে হঠাৎ কোম্পানির সদর দপ্তর থেকে নির্দেশ আসে—উইলিয়াম সাহেবকে গ্রেফতার করতে হবে, কারণ তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছিলেন। তাঁকে জানোবিয়া জাহাজেই গ্রেফতার করে ঢাকায় নেওয়া হয়। নিজের সম্পদ বিক্রি করে তিনি কোম্পানির দেনা শোধ করলেও আর দেশে ফেরা হয়নি। ঢাকাতেই দারুণ দুঃখ–কষ্টের মধ্যে তাঁর মৃত্যু হয়।

কোম্পানির স্ট্যাম্প কেলেঙ্কারি

একই সময়ে কুমারখালীতে আরেকটি ঘটনা ঘটে। এলাহাবাদ থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে “চার্লস এলেন” নামক জাহাজ থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির উনিশ রীম স্ট্যাম্প কাগজ চুরি হয়ে আসে কুমারখালীতে। তদন্তে দেখা যায় স্থানীয় ব্যবসায়ী রামগতি চৌধুরী, মধুরা বণিক, দ্বারিকা বণিক ও মাধব বণিকের কাছে সেগুলো পাওয়া গেছে। তবে প্রমাণিত হয় যে, চুরি করেছিল জাহাজের নাবিকরাই, আর ব্যবসায়ীরা সরল বিশ্বাসে কিনেছিল। ফলে পাবনার ম্যাজিস্ট্রেট এইচ. এল. ডাম্পিয়ার সবাইকে খালাস দেন।

কুমারখালীতে সাংস্কৃতিক জাগরণ

ঢাকা ও কলকাতার মাঝামাঝি অবস্থান, গড়াই নদীর ঘাট এবং ব্যবসা–বাণিজ্যের কারণে কুমারখালীতে দ্রুত গড়ে ওঠে এক মিশ্র সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। শিক্ষিত ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এখানে বসতি স্থাপন করেন।

১৮৪০ সালে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেরণায় ও কেশবচন্দ্র সেনের উৎসাহে কুমারখালী ব্রাহ্ম সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়। রামতন লাহিড়ী উদ্বোধন করেন ব্রাহ্ম মন্দির। এ আন্দোলনের প্রভাবে কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার, বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী, শিবচন্দ্র বিদ্যার্নবসহ অনেক প্রগতিশীল মানুষ ব্রাহ্ম সমাজে যুক্ত হন।

প্রশাসনিক পরিবর্তন ও জমিদারি প্রথা

জমিদাররা স্থানীয় আইনশৃঙ্খলার জন্য চৌকিদার ও দফাদার নিয়োগ করতেন। পরে এদের বেতন সরকারিভাবে প্রদান করার প্রথা চালু হয়। এ সময় বাংলার প্রশাসনিক বিভাজনে কুমারখালী একদিকে বরেন্দ্র অঞ্চলের সঙ্গে, আবার গড়াই নদীর উত্তর-পূর্ব তীর যশোর জেলার সঙ্গে যুক্ত ছিল। ফলে ১৮২৮ সালে পাবনা জেলা গঠিত হলে কুমারখালী পাবনার অন্তর্ভুক্ত হয়।

 

মহকুমা শহরে উন্নীতকরণ

১৭৮৭ সালে প্রথম জেলা ঘোষিত হয় নদীয়া। এর পর রাজশাহী, মুর্শিদাবাদ প্রভৃতি জেলা গঠিত হয়। পরে ১৮৫৭ থেকে ১৮৬০ সালের মধ্যে কুমারখালী মহকুমা শহরে উন্নীত হয়। সে সময় কুমারখালী, ভালুকা, পাংশা এবং বালিয়াকান্দি ছিল এর অধীন। বর্তমানে খোকসা যে একটি পূর্ণাঙ্গ উপজেলা, তখন সেটি কুমারখালী থানার অন্তর্ভুক্ত ছিল। কুমারখালী শহরে একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং মুন্সেফ আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে প্রথম মুন্সেফ হিসেবে আসেন ইশানচন্দ্র দত্ত। দুর্ভাগ্যবশত তিনি ১৮৬১ সালের ৮ মে নীকার ডুবিতে প্রাণ হারান। তাঁর পুত্র ছিলেন খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ ও ইতিহাসবিদ রমেশচন্দ্র দত্ত। পরবর্তীতে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের চাচা উমেশচন্দ্র দত্তও এখানে মুন্সেফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

প্রশাসনিক কেন্দ্র ও শিক্ষা ব্যবস্থার বিকাশ

সে সময় কুমারখালী মহকুমার সাব-ডিভিশনাল হেডকোয়ার্টার ছিল আজকের এলংগী গ্রামে। যেখানে বর্তমানে এলংগী আচার্য প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত, ঠিক সেই স্থানেই ছিল মহকুমা প্রশাসন। পুরনো জেলখানার ইমারত আজও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

নবাবি আমল থেকেই কুমারখালীতে সমৃদ্ধ শিক্ষা–ব্যবস্থা চালু ছিল। এখানে বহু চতুষ্পাঠী, মক্তব ও পাঠশালা সক্রিয় ছিল। ইংরেজ শাসনের শুরুর দিকে চন্দ্রকুমার তর্কবাগীশসীতানাথ স্মৃতিভূষণ প্রমুখ পণ্ডিতদের টোল বিশেষ খ্যাতি পায়। এক সময় কুমারখালী (তুলসীগ্রাম) পরিচিত হয় “দ্বিতীয় নবদ্বীপ” নামে।

বাংলা বিদ্যালয় ও আধুনিক শিক্ষা

১৮৪৪ সালে গভর্নর জেনারেল লর্ড হার্ডিঞ্জ ভারতে ১০০টি বাংলা বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেন। কুমারখালী শহরেও একটি বাংলা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন প্রখ্যাত সাংবাদিক–সাহিত্যিক কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার

১৮৪৮ সালে গভর্নর জেনারেল লর্ড ডালহৌসীর সময় চালু হয় “Grant-in-Aid” পদ্ধতি, যাতে স্কুল–কলেজগুলো সরকারি আর্থিক অনুদান পেতে শুরু করে। প্রথমে নদীয়া কলেজ ও দুটি স্কুল অনুদান পেলেও অল্প সময়ের মধ্যে কুমারখালীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও তালিকাভুক্ত হয়।

এম.এন. ইংলিশ হাই স্কুল ও নারী শিক্ষা

নীলকুঠির ম্যানেজার ও ব্যবসায়ী মথুরানাথ কুণ্ডু কুমারখালীর এলংগী মৌজার একটি নীলকুঠি ক্রয় করে সেখানে ১৮৫৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন কুমারখালী এম.এন. ইংলিশ হাই স্কুল। এই স্কুল থেকেই বেরিয়ে আসেন সিভিলিয়ান রমেশচন্দ্র দত্ত, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার, এবং শিল্পোদ্যোক্তা মোহিনী মোহন চক্রবর্তী

নারী শিক্ষার জন্যও পথিকৃত কাজ করেন কাঙ্গাল হরিনাথ। তাঁর উদ্যোগে ১৮৬৩ সালে প্রথম কুমারখালী বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমে এটি স্থাপন করা হয় তাঁর নিজ বাড়িতে, পরে বিদ্যালয়টি স্থানান্তরিত হয়। অন্যদিকে ১৮৫৭ সালে নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে কাজীপাড়ায় প্রতিষ্ঠিত হয় একটি আরবি–ফারসি ও হেকিমি শাস্ত্র শিক্ষার কেন্দ্র।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির চিত্র (উনিশ শতক মধ্যভাগে)

১৮৬০ সালের মধ্যে কুমারখালী শহরে ইতিমধ্যেই দাঁড়িয়ে গিয়েছিল:

  • ১টি ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয়

  • ২টি বাংলা পাঠশালা

  • ৪–৫টি টোল (চতুষ্পাঠী)

  • ১টি মাদ্রাসা

  • কাজী, মুন্সী, খন্দকারদের বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত একাধিক মক্তব

 

প্রশাসন ও আইন–শৃঙ্খলা

নবাবি আমলে আইনশৃঙ্খলা দেখতেন ফৌজদাররা, আর ফৌজদারি মামলার বিচার করতেন কাজিরা। ইংরেজ রাজত্ব শুরু হলেও কিছুদিন এ ব্যবস্থা বহাল ছিল। থানাকে তখন বলা হতো “থানাই” এবং দারোগাকে বলা হতো “থানাদার”। কুমারখালী শহরের উত্তরে একতারপুরে এবং পূর্বদিকে ফুলবাড়ীতে (বর্তমান খোকসা) ছিল নৌচৌকি। শাজাহানের আমল থেকেই ফুলবাড়ীর নৌচৌকি চালু ছিল। তখন পদ্মা নদী প্রবাহিত হতো শিলাইদহের কুঠিবাড়ির পাশ দিয়ে, আড়পাড়া–কশবা গ্রামের গা ঘেঁষে, যা আজও কশবা–কণ্ঠগজরার ভামোশে স্মৃতি হয়ে আছে।

১৮০২ সালে গভর্নর জেনারেল ডালহৌসী আধুনিক থানা ব্যবস্থা চালু করেন। কুমারখালী ও ভালুকায় দুটি থানার প্রতিষ্ঠা হয়। থানা কর্মকর্তার নাম ছিল “ওভারসিয়ার”। জমিদারদের ওপর দায়িত্ব ছিল—তাদের অঞ্চলে চুরি, ডাকাতি, খুন বা হাঙ্গামার মতো ঘটনাগুলির সংবাদ থানায় পৌঁছে দেওয়া।

 

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ভিক্ষ

১৮৫৪ সালে আশ্বিন মাসে কুমারখালী অঞ্চলে এক ভয়াবহ ঝড় আঘাত হানে। গড়াই নদীতে অসংখ্য জাহাজ ডুবে যায়। লোকেরা নৌকা ছেড়ে ডাঙায় আশ্রয় নেয়। লোকমুখে প্রচলিত ছিল—“কই মাছ তালগাছে,” অর্থাৎ পানিতে তলিয়ে যাওয়া গ্রামাঞ্চলে মাছ গাছে উঠে পড়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছিল।

১৮৫৯ সালে কুমারখালী এলাকায় ঘটে এক মহাপ্লাবন। মাঠ, ঘাট, নদী–নদী, বিল–হাওর সব একাকার হয়ে যায়। আবার ১৮৬২ সালে সারাদেশের মতো কুমারখালীতেও দেখা দেয় দুর্ভিক্ষ ও মহামারী। চালের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে মণপ্রতি ২ টাকা ৫০ পয়সা দাঁড়ায়। বহু মানুষ প্রাণ হারান।

ইংরেজ শাসন ও ভিক্টোরিয়ার হাতে শাসনভার

১৮৫৮ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছ থেকে ভারতের শাসনভার আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটিশ রানী ভিক্টোরিয়ার হাতে স্থানান্তরিত হয়। এর ফলে কোম্পানি শাসনের অবসান ঘটে এবং কুমারখালী ব্রিটিশ সরকারের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে আসে।

স্যার পিটার গ্রান্টের সফর ও মথুরানাথ কুণ্ডুর সাহসিকতা

১৮৫৯ সালে ছোট লাট স্যার পিটার গ্রান্ট কলকাতা থেকে পাবনা যাওয়ার পথে স্টিমারযোগে কুমারখালীর ঘাটে আসেন। সেই সময় দুই কূলে নীলচাষীরা নীলকরদের বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভে ফেটে পড়ছিল। তখনই অসামান্য সাহসিকতার পরিচয় দেন কুমারখালী এম.এন. ইংরেজি হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মথুরানাথ কুণ্ডু

তিনি নৌকা দিয়ে স্টিমার থামানোর চেষ্টা করেন, ব্যর্থ হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন গড়াই নদীর উৎসমুখে। স্যারের স্টিমার থেমে যায়। ভিজে গায়ে বিনম্রভাবে তিনি আবেদন জানান কুমারখালী হাই স্কুলে সরকারি সাহায্যের জন্য। তাঁর আবেদন গৃহীত হয় এবং কুমারখালী স্কুল সরকারি সহায়তা পায়।

স্যার পিটার গ্রান্ট পাবনা সদর দরবার বসালে শত শত নীলচাষী হাজির হয়। তিনি তাঁদের কথা শোনেন এবং সমস্যার সমাধানে ব্যবস্থা নেন।

নদীয়া জেলার পুনর্গঠন

স্যার পিটার গ্রান্টের নির্দেশে ১৮৬০ সালে নদীয়া জেলা গঠন করা হয়, যেখানে অন্তর্ভুক্ত হয় কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, কৃষ্ণনগর, মাগুরা, কোটচাঁদপুর, নড়াইল, যশোহর, বনগাঁ, শান্তিপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বসিরহাট, বারাসাত, আলিপুর, পোর্ট মাঙ্গালা এবং ডায়মন্ড হারবারসহ একাধিক সাব–ডিভিশন।

কুমারখালী পৌরসভার প্রতিষ্ঠা

১৮৬৯ সালের ১ এপ্রিল লেফটেন্যান্ট গভর্নরের আদেশে নদীয়া (নবদ্বীপ), কুষ্টিয়া, কুমারখালী ও মেহেরপুরে পৌরসভা গঠনের নির্দেশ জারি হয়। সে অনুযায়ী কুমারখালী পৌরসভা গঠিত হয়। প্রশাসক ছিলেন সরকার–নিযুক্ত মহকুমা হাকিম। তিনি স্থানীয় কমিশনারদের সহায়তায় পৌরসভার কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।

পৌরসভা এলাকার চিত্র (ঐতিহাসিক স্মৃতি)

সেই সময় কুমারখালী পৌর বাজারের পাশেই ছিল সরকারি দপ্তরসমূহ। বর্তমানে যেখানে হীরা টেক্সটাইলসহ বহু তাঁতের ফ্যাক্টরি রয়েছে, সেখানেই ছিল সেই বাজার। সাব–রেজিস্ট্রি অফিস ছিল রেলস্টেশনের কাছাকাছি। থানা তার আদি অবস্থানে এখনও টিকে আছে। পুরনো ডাকঘর ভবন আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তবে নীলকুঠির দালানটি গড়াই নদীর গর্ভে হারিয়ে গেছে। বাজারের কিছু পুরনো দালান এখনও ইতিহাসের নিদর্শন হিসেবে বেঁচে আছে।

 

কুমার ও তন্তুবায় সম্প্রদায়ের আগমন

কুমারখালী শহরের আদি অধিবাসী ছিলেন পাল বা কুমার সম্প্রদায়। তাদের প্রাচীন নিবাস ছিল গৌড়ে। ১৭৪০–১৭৫০-এর দশকে বর্গিদের আক্রমণ শুরু হলে তারা কুমারখালী অঞ্চলে চলে আসেন। তাঁদের সাথে আসে তন্তুবায় সম্প্রদায়, যারা পরে প্রামাণিক, বসাক ও পোদ্দার নামে পরিচিত হয়। বসাকরা মূলত রঞ্জক ছিলেন এবং রং করা দ্রব্যের ব্যবসা করতেন।

তাদের আদি নিবাস ছিল রাজমহল (বর্তমান বিহার)। কেউ কেউ ইংরেজদের আগমনের আগেই কলকাতার সূতাপট্টি হাটে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। অন্যরা কুমারখালী ও পাবনা অঞ্চলে বসতি গড়েন। কুমারখালীর কুমারদের (পাল সম্প্রদায়) একটি অংশ পরে কলকাতার কুমারটুলিতে বসবাস শুরু করে।

ব্রাহ্মণ, কায়স্ত ও অন্যান্য হিন্দু সম্প্রদায়

ব্যবসা বা কুঠিয়ালদের কুঠিতে চাকরির সুযোগে এখানে আসে বেনে দত্ত সম্প্রদায়। কুলীন হিন্দু জমিদারদের নায়েব, আমলা ও গোমস্তা হিসেবে কাজ করতে গিয়ে তারা জমিজমার মালিক হয়। ফলে এখানে চক্রবর্তী, বাগচি, লাহিড়ী, গোস্বামী, অধিকারী, সান্যাল, ভাদুরী, মুখার্জি, ব্যানার্জি, মজুমদার, খৈত্র, রায় প্রভৃতি ব্রাহ্মণ বংশের আধিক্য দেখা যায়।

পূজারী ব্রাহ্মণদের মধ্যে ভট্টাচার্য গোত্রের নিমচন্দ্র ভট্টাচার্য এ অঞ্চলের আদি পুরুষ হিসেবে বিবেচিত। তাঁর নির্মিত প্রাচীন অট্টালিকা এখনও কুমারখালী শহরে বিদ্যমান। এছাড়া ত্রিবেদী ও চতুর্বেদী ব্রাহ্মণরাও এখানে বসবাস করতেন। কায়স্ত সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘোষ, বোস, সেন, মিত্র, নন্দী ও চাকী বংশীয় পরিবারেরা মূলত ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

কুমারখালীর বিভিন্ন পরগনা—রোকনপুর, ব্রক্ষণকর্ণ, মোহাম্মদশাহী, জাহাঙ্গীরাবাদ, ইবরাহিমপুর, ইসলামপুর, নাজির এনায়েতপুর, ভড় ফতেহপুর, জিয়া রাথী, বেগমাবাদ ও কান্তনগর—এ জমিদারদের কাচারী ছিল। এর ফলে এখানে পাইক ও বরকন্দাজ সম্প্রদায়ও বসবাস শুরু করে।

বৈষ্ণব প্রভাব ও বৈরাগী সম্প্রদায়

চৈতন্য দেবের আগমন এই অঞ্চলে বৈষ্ণব ও বৈরাগী সম্প্রদায়ের বিস্তার ঘটায়। একাধিক গোপীনাথ মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। একই সঙ্গে কুবের, মণ্ডল, বিশ্বাস, চণ্ডাল, যোগী ও নাথ সম্প্রদায়ও বসতি স্থাপন করে।

মুসলিম সম্প্রদায়ের বিস্তার

কুমারখালীর আশপাশে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারগুলো যেমন—সৈয়দ, খন্দকার, কাজী, মোল্লা ও মুন্সী বসবাস করতেন। শেখ, সর্দার ও খাঁ পরিবারগুলো শহরের আশেপাশে ছিল। ঘোড়ার গাড়ি চালনার জন্য শাহ (খুকসু) সম্প্রদায় সরাসরি শহরে বাস করত। তাদের জন্য একসময় সেরকান্দী ও দুর্গাপুর অঞ্চলে মাহাজীপাড়া নামে বিশেষ পাড়া গড়ে ওঠে।

মুসলমান তাঁতীরা প্রাচীনকাল থেকেই বাটিকামারা এলাকায় বসবাস করতেন। ধর্মান্তরিত বিশ্বাস ও মণ্ডল সম্প্রদায় প্রথমে এদ্রাকপুরে, পরে তেবাড়িয়া ও এলংগী এলাকায় বসতি গড়ে।

সামাজিক সৌহার্দ্য ও পৌরসভা

এত বৈচিত্র্যময় সম্প্রদায়ের সমন্বয় ও সৌহার্দ্যের মধ্য দিয়েই গড়ে ওঠে কুমারখালী শহর। হিন্দু-মুসলমান, বৈষ্ণব-ব্রাহ্মণ, তাঁতী-ব্যবসায়ী—সবাই মিলেমিশে গড়ে তোলে এক সাংস্কৃতিক ঐক্যের কেন্দ্র। এই সৌহার্দ্যই পরবর্তীতে ১৮৬৯ সালে কুমারখালী পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ভিত্তি স্থাপন করে।

কুমারখালী উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা

 

কুমারখালী উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা:

 

কুমারখালী উপজেলার সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা (বিদ্যালয়):

১. কুমারখালী সরকারি পাইলট বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়

কুমারখালী উপজেলার এমপিওভুক্ত উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তালিকা:

১. জি ডি সামসুদ্দিন আহমেদ কলেজিয়েট স্কুল
২. মধুপুর স্কুল এন্ড কলেজ

কুমারখালী উপজেলার এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা (বিদ্যালয়):

১. আলাউদ্দিন আহম্মেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়
২. দূগার্পুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. মকলেছুর রহমান ০১৭১৯—০৩০১২৭
৩. হাসিমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় নুরুদ্দিন আহমেদ ০১৭৪১—৩০৮১৭৫
৪. খোরশেদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাজেদুর রহমান ০১৮১৬—৬৬৭৫৭৪
৫. কয়া ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় এ বি এম বদিউজ্জামন ০১৮৬৬—৭৪৫৩৬৫/০১৭৪৫১৭৫০৮০
৬. মহেন্দ্রপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় আব্দুর রহিম খান ০১৭২১—৫০৫৪০১
৭. সুলতানপুর মাহতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় আব্দুর রশিদ বিশ্বাস ০১৭২২—৪৬৯৩৭৫
৮. সোন্দাহ নন্দলালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. শরীফুল ইসলাম ০১৭০৬—৩৯১৫০৪
৯. পাথরবাড়ীয়া মজিবর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয় মোঃ রবিউল ইসলাম ০১৭১৫—৮০০৪০৭

১০. বুঁজরুখ বাঁখই মাধ্যমিক বিদ্যালয় মোনায়েম খান ০১৭২৫—৯৯০৮২৮
১১. ডাঁশা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. ফারুক হোসেন ০১৭১০—০৩২৪২৭
১২. যদুবয়রা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মুন্সী বজলুর রহমান ০১৭২০—৪৫৮২১৮
১৩. পান্টি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় দীনবন্ধু কুমার বিশ্বাস ০১৭২২—৩২৪২৩৩
১৪. দক্ষিণ মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. শহিদুল ইসলাম ০১৭২৪—৫১৬৭৭৫
১৫. ইউনাইটেট বাঁশগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয় মোঃ ফারুক হোসেন ০১৭৬১—৪০২০২০
১৬. মিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মোছা. চমন আফরোজ ০১৭৯৬—৬৯৩১৭০
১৭. চৌরঙ্গী মাধ্যমিক বিদ্যালয় শেখ রেজাউল করিম ০১৭১১—৭৩২৫৪৭
১৮. কুশলীবাসা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. রবিউল ইসলাম ০১৭১৫—৫৯৬৪৬৭
১৯. সাঁওতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. সিদ্দিকুর রহমান ০১৭২১—৭৫০৩৯১

২০. জগন্নাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. আনোয়ারুল ইসলাম ০১৭২১—৫৬২২৮৪
২১. নাতুড়িয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মো. মমিনুল ইসলাম ০১৭৩৪—২৫৮৮৪৫
২২. জে. এন. মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. মকছেদ আলী ০১৭১৪—৮১৩৮৭২
২৩. তেবাড়ীয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মোছা. নুরুন নাহার ০১৭১৭—০৬৫০২৭
২৪. গোবরা চাঁদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. আবু নঈম ০১৭১৬—৫৭০১৩৫
২৫. মীর মোশাররফ হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. আব্দুল জলিল ০১৭১৬—০৮৮৪০১
২৬. কুমারখালী এম এন পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ফিরোজ মোঃ বাশার ০১৮৮৫—৯৭৯৮৬৩
২৭. পান্টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. ওবাইদুল হক (দিলু) ০১৭১২—৬৬৭৬০৭
২৮. ডাঁশা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মো. আলতাফ হোসেন ০১৭৪১—৩২২২৪৭
২৯. বাগুলাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মোছা. আছমা খাতুন ০১৭৫১—২৯৭১৫৩

৩০. এনায়েতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. আবু আশয়ারী ০১৭১৬—১৬৯২৬২
৩১. ভি সি ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সুব্রত কুমার ০১৭২৪—২৪৮৩১২
৩২. নিউ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. রবিউল ইসলাম ০১৭১৬—৬৫৭৮৯০
৩৩. আতিয়ার রহমান মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মো. ওবাইদুর রহমান ০১৭২৪—৩৩৮২৬৪
৩৪. সাদিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. বদরুদ্দোজা ০১৭৪৯—১৪৮৯৩৩
৩৫. ভালুকা শহীদ শেখ সদরউদ্দিন নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মো. রশিদুজ্জামান (লিটন) ০১৭১০—৭৪৫৯৭৯
৩৬. উত্তর চাঁদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় এস. কে. মহম্মদ ০১৯৫০—৩৭২০৫৮
৩৭. গড়াই মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. আসরাফুরজ্জামান ০১৭২৮—৯৩৪৯৬৭
৩৮. উত্তর মিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় এম ডি মহিব উল ইসলাম (ভারপ্রাপ্ত) ০১৭১৮৬০৭৭৬৬/০১৭৭৬১৭০৬৪১

৩৯. আলাউদ্দিন নগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মো. মিজানুর রহমান ০১৭১৩—৯০৮১১২
৪০. কল্যাণপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. হাবিবুর রহমান ০১৭১৪—৫১০৯৮৯
৪১. জোতমোড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. আব্দুর রাজ্জাক ০১৭৩৪—০১৯১৯৩
৪২. কবুরাট নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. নুর মহম্মদ ০১৭২৭—৭৯০৫৩০
৪৩. কালোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. মাজহারুল ইসলাম ০১৭২৩—২০৩০৯৩

কুমারখালী উপজেলার ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা (বিদ্যালয়)

১. শালঘর মধুয়া হাজী আছিয়া খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় প্রসেনজিত কুমার বিশ^াস ০১৭১৬৩৭১৭৭৭
২. বি,কে,এম, এন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. মিজানুর রহমান ০১৭১৬—৫৭১৭০২
৩. পারফেক্ট ইংলিশ ভার্সন উচ্চ বিদ্যালয় মো. জাহিদ হাসান ০১৭১৭—০০৭৮১৩
৪. কালিগঙ্গা নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মো. ফজলুল হক ০১৭২৩—২১৭০৬৮
৫. ধলনগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রফিকুল ইসলাম ০১৭২০—৬৬০৪৯২
৬. ছেঁউড়িয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. মুছা করিম ০১৭১৯—৬৬২২০৮
৭. ভড়ুয়াপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. শারমিন আক্তার ০১৭২৮—৯৩৫১২০
৮. রবীন্দ্র মডেল জুনিয়র স্কুল জিয়া উদ্দিন ০১৭২৮—৯০৯৬৩৮
৯. এস এম আইডিয়াল স্কুল জনাব মাসুদ রানা ০১৭১৬—০৭৮৭২৮
১০. কয়া চাইল্ড হ্যাভেন গার্লস জুনিয়র স্কুল মো. আবু সালেহ ০১৭১৮—৩৪৮৮৮৩

 

কুমারখালী উপজেলার এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা (মাদরাসা)

১. ডাঁশা মহর আলী দাখিল মাদ্রাসা মো. কবিরুল ইসলাম ০১৭৭৪—৫০৭৬০৮
২. বিবি আছিয়া খাতুন বালিকা আলিম মাদ্রাসা অধ্যক্ষ, মো. আবুল কাসেম ০১৭২১—১৯১৬৬৯
৩. মহেন্দ্রপুর দারুস সুন্নাহ বালিকা দাখিল মাদ্রাসা মো. হাবিবুর রহমান ০১৭৪০—৯১১৩৮১
৪. পাথরবাড়িয়া হিজলাকর দাখিল মাদ্রাসা মো. মিজানুর রহমান ০১৭১০—৭৮৪৬৫৬
৫. ভালুকা চৌরঙ্গী ফাজিল মাদ্রাসা অধ্যক্ষ, এস. এম. আ. সামাদ ০১৭২৯—৫০৮২৯১
৬. কুমারখালী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা অধ্যক্ষ, মো. রেজাউল করিম ০১৭১৬—২৮৭৪১২
৭. বাঁশগ্রাম ফাজিল মাদ্রাসা (কামিল) অধ্যক্ষ, মো. মসলেহ উদ্দিন ০১৭১৫—২৬৭০৬৪
৮. সাদিপুর আলিম মাদ্রাসা অধ্যক্ষ, মো. আবুল কালাম আজাদ ০১৭১৮—৮২৫০৪২
৯. শাহ মখদুম মৌলানা (রহ) দাখিল মাদ্রাসা আবুল কালাম মুহা. শফিউল্লাহ ০১৭০৬—৫৫৬৩৩১
১০. দয়ারামপুর দাখিল মাদ্রাসা মো. রাশেদুল ইসলাম ০১৯১২—৭৫১৫৯৭
১১. পান্টি দাখিল মাদ্রাসা মো. ইদরিস আলম ০১৭১৮—৯৭৩৯৯৫
১২. আকমল হোসেন দাখিল মাদ্রাসা মো. নুরুল ইসলাম ০১৭২৭—৬৬২৩৫২
১৩. দূর্গাপুর দাখিল মাদ্রাসা মো. আসলাম উদ্দিন ০১৭১৮—৪৫৫১৭৪/০১৯৯২৪৫৬৩৮৫
১৪. সদকী দাখিল মাদ্রাসা মো. আবু জাফর ০১৭১৮—৬০৭৭৭০

 

কুমারখালী উপজেলার ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা (মাদরাসা)

১. মঠমালিয়াট দাখিল মাদ্রাসা মো. ওমর আলী ০১৭২৫—১৮০৪৮৩
২. রসূলপুর দাখিল মাদ্রাসা মো. আ. ঘালিম ০১৭২০—৬৬০৪৩৩
৩. বিরিকয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসা মো. জহিরুল ইসলাম ০১৭১৪—৫৯১৬৬৭
৪. গোবরা দাখিল মাদ্রাসা মো. গোলাম মস্তফা ০১৭১০—৩৬৬৬৯৮
৫. হোসনীয়া আবদুল করিম দাখিল মাদ্রাসা মো. জামাল উদ্দীন ০১৭২৯—৮৭৬৬৮৬
৬. মিজ্জর্াপুর দাখিল মাদ্রাসা মো. ওহাব ০১৭২২—৬৩৬২৩৩
৭. আদর্শ দাখিল মাদ্রাসা মো. শহিদুল ইসলাম ০১৯১৩—৮৮৭৫১৫

 

কুমারখালী উপজেলার স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসা :

১ এলঙ্গী চড়াইকোল সাদেকুল উলুম স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা হাকিম সোমাইয়াছমিন ০১৭১৮৭৬৮৪৪১
২ মহম্মদপুর স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা মুহাম্মদফিরোজআহম্মেদ ০১৭৮১৯৪০৯১২
৩ কুশলীবাসা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রসা ইমরাস হোসেন ০১৭৪১৭১৩৬৯৯
৪ বাঁশআড়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রসা মামুনররশীদ ০১৭৩১৩২৪০৩৫

 

কুমারখালী উপজেলার সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা (কলেজ):

১. কুমারখালী সরকারি ডিগ্রি কলেজ মো. শরিফ হোসেন। ০১৭১২—১৬০৮৪০

 

কুমারখালী উপজেলার এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা (কলেজ):

১. আর্দশ মহিলা ডিগ্রি কলেজ মো. তরিকুল ইসলাম ০১৭১৫—৪১৩৪৫৩
২. আলাউদ্দিন আহম্মেদ ডিগ্রি কলেজ মো. আব্দুল খালেক ০১৭১২—৫৩৮০৯৭
৩. কয়া মহাবিদ্যালয় মো. হারুন—অর—রশিদ ০১৭১৫—২৩২৯১৫
৪. পান্টি মহাবিদ্যালয় (ডিগ্রি) মো. কামাল উদ্দিন ০১৭২১—৮৪৮৬৯৪
৫. মধুপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মো. আব্দুল লতিফ (অধ্যক্ষ) ০১৭২৬—৫২২৩৯৭
৬. বাঁশগ্রাম আলাউদ্দিন আহম্মেদ ডিগ্রি কলেজ গোলাম ছরোয়ার ০১৮১১৭৯৫৫৯২
৭. রাগীব হাসান টেকনিক্যাল বিজনেস ম্যা. কলেজ 
৮. শিলাইদহ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলেজ (ডিগ্রি) মো. মুজাহিদ হাসান ০১৭১১—২৩৫৯৩২
৯. বাহার কৃষি কলেজ নুরে আলম সিদ্দিক ০১৯১০—৪৯২৬১০

 

কুমারখালী উপজেলার ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা (কলেজ):

১. জগন্নাথপুর আইডিয়াল কলেজ মো. মজিবর রহমান ০১৭১৬—৪৯০২৯৩
২. চৌরঙ্গী মহাবিদ্যালয় মো. লাল মহাম্মদ ০১৭৩১—২৩২৭৮১

 

কুমারখালী উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment