কর্মসূচি – হাট পরিক্রমা [ Project – Haat Porikroma ]

হাট পরিক্রমা সুফি ফারুক এর একটি কর্মসূচি। গ্রামীণ গ্রোথ সেন্টার ও হাটবাজারসমূহ গ্রামীণ অর্থনীতির হৃদপিণ্ড। গ্রামীণ সড়কসমূহ গ্রামীণ অর্থনীতির শিরা-উপশিরা। একটা সময় হাট মানে ছিল তা কেবলই সাপ্তাহিক এবং পণ্য বেচাকেনার প্রতিযোগিতা ছাপিয়েও যেন উৎসব। সেখানে বাণিজ্য ছিল তবে তা হয়ে উঠত স্থানীয়দের মিলন মেলা। হাটকে স্থানভেদে গঞ্জও বলা হতো।

হাট পরিক্রমা কর্মসূচি

কর্মসূচি - হাট পরিক্রমা [ Project - Haat Porikroma ]

 

হাটের সঙ্গে গ্রামীণ জনপদের সংস্কৃতি, কৃষ্টি আচার কিংবা সভ্যতার বিকাশে যে এক বিরাট যোগাযোগ তা আরেকটু অন্দরে গিয়ে খুঁজলে বিস্তৃত পরিসর খুঁজে পাওয়া যায়। গ্রামীণ জনগণ অন্তত প্রতি সপ্তাহে ওই এলাকার হাটবাজারে আসে। কাজকর্ম শেষ করে কেথাও বসে, গল্প-আড্ডা করে। তাই মানুষের কাছাকাছি পৌছাতে, তাদের কথা শুনতে হাটে যাবার চেয়ে সহজ কোন রাস্তা নেই।

সুফি ফারুক দেশের প্রত্যন্ত হাটে মাঠে ঘাটে গিয়ে জনগণকে আধুনিক প্রযুক্তি, আগামী দিনের পেশা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে দিক নির্দেশনা দেয়া এই কর্মসূচির প্রণয়ন করেন। এই কর্মসূচির আওতায় অনেক গুলো হাট পরিক্রমা করা হয়েছে।

 

হাট পরিক্রমা, শালঘর মধুয়া বাজার

 

হাটবাজারের গল্প বা উপাখ্যান পুস্তকে লিখিত না থাকলেও স্থানীয় লোকমুখে এখনো হাটের ইতিহাস ও ঐতিহ্য টিকে আছে। বিশেষ করে গ্রামীণ উন্নয়ন বা আঞ্চলিক উন্নয়নের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ গ্রামীণ হাটের। আবার অনেক অঞ্চলে শত শত বছরের পুরনো সেই হাটকে ঘিরে মানুষের জীবন-জীবিকা আবর্তিত হতে থাকে। যদিও সময়ের বিবর্তনে অনেক হাট বা গঞ্জ হারিয়েছে তার জৌলুস ঐতিহ্য; তবে এখনো এমন বহু পুরনো হাট আছে, যা ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাক্ষী বহন করে চলছে। আমরা এখনো এই সংস্কৃতিটাকে বাঁচিয়ে রাখতে কাজ করতে চাই।

 

ফটো গ্যালারী:

 

গ্রামীণ গ্রোথ সেন্টার ও হাট-বাজারসমূহের আরও কিছু আর্থ-সামাজিক বিশেষত্ব রয়েছে । এ সব স্থান গ্রামীণ উদ্যোগ- উদ্ভাবনের কেন্দ্রস্থল, সামাজিক- সাংস্কৃতিক ভাবে ও হাট-বাজার অনেক গুরুত্বপূর্ণ । হাট-বাজার গ্রাম এবং  শহরের চক্রাকার অর্থনীতির (circular economy) অন্যতম সঞ্চালক । অন্যদিকে, গ্রোথ সেন্টার/ হাট-বাজারকে কেন্দ্র করে ক্রমশ: গ্রামীণ রুপান্তর ঘটে । গ্রামীণ পরিবেশে গ্রোথ সেন্টার/ হাট-বাজার নগরায়নের কেন্দ্রবিন্দু । অনেক উপজেলায় দেখা যায়, গ্রোথ সেন্টার/ হাট-বাজারকে কেন্দ্র করে আবাসনের বিস্তার (sprawl) ঘটছে ।

বিগত দশকগুলোতে দেশের জিডিপি-জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে গ্রামীণ কৃষি-অকৃষি উৎপাদন, হাট-বাজার এবং সড়ক অবকাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে । গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় ৭২ ভাগ হওয়া সত্ত্বে ও জিডিপিতে গ্রামের হিস্যা তুলনামুলক কম।

বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমশ উচ্চ মধ্যম আয় এবং উচ্চ আয়ে প্রবেশের জন্য গ্রামীণ অর্থনীতির পরিকল্পিত সম্প্রসারণ দরকার। এ পরিকল্পিত সম্প্রসারণের জন্য গ্রামীণ হাট-বাজারসমূহের বিষয়ে জাতীয় পর্যায় এবং স্থানীয় পর্যায়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা প্রয়োজন ।

বর্তমানে সারাদেশে ২১০০ গ্রামীণ গ্রোথ সেন্টার রয়েছে । ১৯৯০ এর দশকে এ গ্রোথ সেন্টারসমূহ নির্ধারণ করা হয়েছিল । এইসব গ্রোথ সেন্টার উন্নয়ন এবং সেগুলোকে মানসম্মত সড়কের সাথে সংযুক্ত করার মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে । অর্থনীতির উন্নয়নের চলমান অবস্থায় সারাদেশে গ্রোথ সেন্টারের সংখ্যা বাড়ানো খুবই দরকার । নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির জন্য সেগুলোর যথাযথ পরিকল্পনা ও ব্যবহার করা জরুরি ।

৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ কর্মপরিকল্পনার সাথে সমন্বয় করে গ্রোথ সেন্টার/ হাট-বাজার বিষয়ে নিম্নবর্ণিত পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হযেছে ।

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment