সাবালক হবার পরে শ্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়য়ের সাথে আমার যখন প্রথম দেখা হয়, উনি খুব সানন্দে আমাকে গ্রহণ করেন নি। কারণ আমার কোন প্রিয়জন আমার সম্পর্কে তার মন দুষিত করে রেখেছিল। এটি আমার জীবনের খুব নিয়মিত প্রাপ্তি।
আলোচনা শুরুর অনেকক্ষণ পরে আমার ২/৩ টি প্রশ্ন বা অপিনিয়নে তার চোয়াল নরম হওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে এসে উপস্থিতদের ছেড়ে আমার সাথেই গল্প করে সময়টা পার করলেন। আমার জন্য নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৩ গুন পার হবার পরে, তার সহকারীর পরবর্তী এপয়েন্টমেন্ট বারংবার মনে করিয়ে দেয়ায়, সেই আলোচনা শেষ হল।

একবার বাহার ভয়ের আরম্ভ পত্রিকার উৎসব সংখ্যায় তার লেখার পাশে আমার শাস্ত্রীয় সঙ্গীত নিয়ে একটা লেখা ছাপা হয়েছিলো। আমি ভাবতেও পারিনি যে তিনি আমার লেখা পড়বেন এবং মনে রাখবেন, যেখানে আমিই ভুলে গিয়েছিলাম। তিনি প্রশ্ন করার মতো মনে রেখেছিলেন!
তার সাথে গল্পের এক পর্যায়ের বলা তার কিছু ইন্টারেস্টিং কোটেশন:
“লেখাপড়া করা লোকজনকে এখন রাজনীতিতে সবাই অনিরাপদ বোধ করে।”
“প্রিন্সিপ্যালের ভ্যালু শেষ হয়ে গেছে এখন এটা ট্রেড ব্রান্ড উইথ প্রাইস”
“আমি তো বড় বড় বক্তৃতার লোক নই। তাই আমি যুদ্ধ শুরুর আগেই বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে একটা পেপার তৈরি করে মিসেস গান্ধিকে দিয়েছিলাম। হাতে দেবার সময় বললাম – যে যাই বলুক, বাংলাদেশটা হয়ে যাবে।”
বর্তমান সময়ের রাজনীতির চাণক্য, বেঁটে বুড়ো ব্রাহ্মণ রাজনীতি নিয়ে আরব্য রজনীর গল্প জানতেন। সেই গল্প শোনার মূল প্রাপ্তি ছিল তার প্রজ্ঞা উৎসারিত ফুটনোট।
প্রণব মুখোপাধ্যায়য়ের সাথে যতবার কথা হয়েছে একটি বিষয় বারবার মনে হয়েছে – তিনি অনেক কিছুর উত্তর দিতে চান, কিন্তু সঠিক প্রশ্নগুলো হয়ত করা হয়নি।
#PranabMukherjeeRIP
প্রণব মুখোপাধ্যায় সম্পর্কে জানতে:
- উইকিপিডিয়া : প্রণব মুখোপাধ্যায়