লাকী আখান্দ আমার অন্যতম প্রিয় সুরকার। তিনি গাইতেনও। তবে তার গাওয়ার আমি বিশেষ ভক্ত ছিলাম না। ভক্ত ছিলাম তার সুরের।
যে যেসময় গান শোনার সময় সুরকারের নাম খুঁজতাম না, সুরকারকে নিয়ে ভাবতাম না, শুধু গাইয়েকে চিনতাম, সেসময় থেকে তার গান শুনছি। বড় হতে হতে একসময় সুরকারের গুরুত্ব বোঝা শুরু করলাম। প্রথম সুরকার হিসেবে তার নাম খুঁজে বের করি ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরীর গাওয়া “আজ এই বৃষ্টির কান্না” গানটা শোনার একদিন।
![Lucky Akhand আমার লাকী আখান্দ | অসুরের সুরলোকযাত্রা সিরিজ 2 আমার লাকী আখান্দ [ Lucky Akhand ]](https://sufifaruq.com/wp-content/uploads/2017/04/Lucky-Akhand-210x300.jpg)
আমার লাকী আখান্দ
একসময় জেনেছি কুমার বিশ্বজিতদার গলায় গাওয়া সেই অদ্ভুত সুন্দর “যেখানে সীমান্ত তোমার” গানটার সুরই শুধু তার না, কথাও তার। এমন গানের স্রষ্টার সৃষ্টি করা গানগুলো খুঁজে একে একে শুনতে থাকি। তার নিজের গাওয়াও এক পর্যায়ে ভালো লাগতে থাকে। একে একে খুঁজেছি তার সুর দেয়া, গাওয়া অমর গানগুলো:
- যেখানে সীমান্ত তোমার (কথা ও সুর: লাকী আখান্দ, কণ্ঠ: কুমার বিশ্বজিত)।
 - আজ এই বৃষ্টির কান্না (কথা : কাওসার আহমেদ চৌধুরী, সুর: লাকী আখান্দ, কণ্ঠ: ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী)।
 - আবার এলো যে সন্ধ্যা
 - এই নীল মনিহার (কথা: এস এম হেদায়েত, সুর ও কণ্ঠ : লাকী আখান্দ)
 - কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে রাতের নির্জনে (কথা : কাওসার আহমেদ চৌধুরী, সুর: লাকী আখান্দ, কণ্ঠ: সামিনা চৌধুরী)।
 - তুমি কি দেখেছো পাহাড়ি ঝর্না।
 - তুমি ডাকলে কাছে আসতাম সেতো জানতেই।
 
৭ জুন, ১৯৫৬ পুরানো ঢাকায় জন্মেছিলেন। খুব ছোট বেলা থেকেই সঙ্গীত শিখেছিলেন বাবার কাছে। ৭ বছর বয়স থেকে তৎকালীন পাকিস্তান রেডিওতে গাইতে শুরু করেন। ১৪ বছর বয়সে পাকিস্তান এইএমভি এবং ১৬ বছর বয়সে পাকিস্তান এইএমভির সঙ্গীত পরিচালক হয়ে ওঠেন।

১৯৭৫ সালে ছোট ভাই হ্যাপি আকন্দের এলবামে সঙ্গীত দেন। সেই এলবামের গানগুলো দারুণ জনপ্রিয় হয়েছিলো। “আবার এলো যে সন্ধ্যা” গানটি তো এখনো নিয়মিত গাওয়া হচ্ছে। আশির দশকে তিনি চলচ্চিত্রেও সঙ্গীত দেন। ৮৪ সালে তার নিজের প্রথম এ্যালবাম বের হয়। এরপরে ঘটে সেই সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত ঘটনাটি। ভাই হ্যাপি আখান্দের অকাল মৃত্যুতে সঙ্গীত চর্চা বন্ধ করে দেন আমাদের লাকী আখান্দ। শোক কাটিয়ে উঠতে প্রায় এক যুগ যায়। এর পরে বহু অনুরোধে তিনি আবার ফেরেন বটে। অনেক গুলো দারুণ সব কাজ উপহার দেন।
দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস ক্যান্সারে ভোগার পরে ২০১৭ সালের ২১ এপ্রিল আমাদের সবাইকে শোকের স্রোতে ভাসিয়ে চলে যান আমাদের লাকী আখন্দ।
লাকী আখন্দের এ্যালবাম:
- লাকী আখান্দ (১৯৮৪)
 - পরিচয় কবে হবে (১৯৯৮)
 - বিতৃষ্ণা জীবনে আমার (১৯৯৮)
 - আনন্দ চোখ (১৯৯৯)
 - আমায় ডেকোনা (১৯৯৯)
 - দেখা হবে বন্ধু (১৯৯৯)
 - তোমার অরণ্যে
 
![আমার লাকী আখান্দ Lucky Akhand আমার লাকী আখান্দ | অসুরের সুরলোকযাত্রা সিরিজ 4 আমার লাকী আখান্দ [ Lucky Akhand ]](https://sufifaruq.com/wp-content/uploads/2023/01/আমার-লাকী-আখান্দ-Lucky-Akhand--300x157.jpg)
লাকী আখান্দ সম্পর্কে আরও জানুন:
আরও পড়ুন :
![আমার লাকী আখান্দ Lucky Akhand আমার লাকী আখান্দ | অসুরের সুরলোকযাত্রা সিরিজ 1 আমার লাকী আখান্দ [ Lucky Akhand ]](https://sufifaruq.com/wp-content/uploads/2023/01/আমার-লাকী-আখান্দ-Lucky-Akhand-.jpg)